মরিসন সরকার বিতর্কিত ধর্মীয় বৈষম্য বিলের দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশ করেছে

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ১১টি মূল পরিবর্তনসহ বিতর্কিত রিলিজিয়াস ডিসক্রিমিনেশন বা ধর্মীয় বৈষম্য বিলের দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ধর্মীয় সংস্থার সংজ্ঞা পরিবর্ধন করা হলেও দাতব্য সংস্থাসহ কোন প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা প্রদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Prime Minister Scott Morrison with Attorney-General Christian Porter before a Chamber of Commerce and Industry WA

Prime Minister Scott Morrison and Attorney-General Christian Porter are finalising a Religious Discrimination Bill. Source: AAP

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং অ্যাটর্নি-জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার বিভিন্ন গ্রুপের প্রায় ৬০০০ লিখিত আবেদন ও সমালোচনার পর ধর্মীয় বৈষম্য বিলের দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশ করেছেন।

দ্বিতীয় খসড়ায় ১১টি পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন দাতব্য সংস্থা এবং ধর্মীয় হাসপাতালগুলিকে ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে স্বাস্থ্যকর্মীদের রোগী বা বাসিন্দাদের (রেসিডেন্ট) প্রতি বৈষম্য করার অধিকার নেই।

বিলটি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে ধর্মীয় হাসপাতাল এবং এজেড-কেয়ার  কেন্দ্রগুলি রিলিজিয়াস ক্যাম্প এবং সম্মেলন কেন্দ্রগুলি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে আবাসন এবং কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারবে।

মিঃ মরিসন বলেছেন ধর্মীয় বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়ান স্বাধীনতার প্রতিনিধিত্ব করে।

"মানুষ তার জীবনের বড় প্রশ্নগুলির বিষয়ে যখন বিশ্বাস করে, বা বিশ্বাস করে না, তা নিতান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। ধর্ম এবং বিশ্বাসের বিষয়টিও তাই। আরও ব্যক্তিগত কিছু কল্পনা করা শক্ত। আমাদের দেশে, এই বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের বৈচিত্র্য আসলে আমাদের স্বাধীনতারই প্রকাশ, এটাই অস্ট্রেলিয়া।"

প্রস্তাবিত আইন অনুসারে, কোন ধর্মীয় হাসপাতাল গর্ভপাত বা আইভিএফ চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করতে পারে, তবে বিশ্বাসের ভিত্তিতে কাউকে চিকিৎসা দিতে প্রত্যাখ্যান করতে পারে না।

প্রস্তাবিত এই সংশোধনীতে সকলেই খুশি নন।

ইকুয়ালিটি অস্ট্রেলিয়ার আন্না ব্রাউন "স্টেটমেন্টস অফ বিলিফ" ধারাটির সম্ভাব্য পরিণতি তুলে ধরছেন, যা তিনি বলেছেন যে নজিরবিহীন।

"আমাদের আরো বৈষম্যমূলক আইন আছে, কিন্তু এটি ঐসব আইনকে ছাড়িয়ে গেছে। এটি একটি নতুন, নজিরবিহীন, রেডিক্যাল বিধান এবং এটি যা করবে তা হল ধর্মের নামে বৈষম্যমূলক অভিযোগ থেকে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যাবে। তাই এটি এই দেশে কয়েক দশক ধরে চলমান বিদ্যমান বৈষম্য আইনগুলিকে ছাড়িয়ে যাবে।"

পাবলিক ইন্টারেস্ট অ্যাডভোকেসি সেন্টার এক বিবৃতিতে এই কথাগুলোই বলছে, "এই বিলে কমুনিটির মধ্যে যে সকল গ্রুপের অধিকার খর্ব হচ্ছে সেই উদ্বেগকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এটি বরং জনসাধারণকে সেবা প্রদান করার সময় ধর্মীয় সংগঠনগুলিকে বৈষম্য করার সুযোগকে আরও প্রশস্ত করে তুলবে এবং "স্টেটমেন্টস অফ বিলিফ" রক্ষা করতে গিয়ে বা তার ভিত্তিতে ভিন্ন  বিশ্বাস বা সম্প্রদায়ের মানুষদের অবমাননা, ভয় দেখানো, অপমান করা বা উপহাস করার সুযোগ পাবে।"

ফেডারাল অ্যাটর্নি-জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার বলেছেন যে পরিবর্তনগুলি বিলের উদ্দেশ্যকে পরিবর্তন করবে না, বরং প্রাথমিক প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের উদ্বেগের সমাধান করার চেষ্টা করেছে।

তবে মিস ব্রাউন বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে তাতে বিলটি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।

মিঃ মরিসন পরবর্তী কনসালটেশন পর্বকে স্বাগত জানিয়েছেন যেখানে জনগণ পরবর্তী বছরের জানুয়ারীর শেষ অবধি দ্বিতীয় খসড়ায় মন্তব্য করতে পারে।

সরকার আগামী বছরের শুরুর দিকে এই বিল সংসদে উপস্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

Share
Published 11 December 2019 12:56pm
Updated 11 December 2019 1:06pm
By Ben Madden
Presented by Shahan Alam
Source: SBS News

Share this with family and friends