পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান নিহত, দুর্ঘটনা না হত্যা ,প্রধানমন্ত্রীর তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ পুলিশ গুলি করেছিল অভিযোগ করে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবার। দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে। গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন।

Major(Rtd) Sinha Md Rashed

Major(Rtd) Sinha Md Rashed Source: Daily Star


পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তারকে ফোন করে সমবেদনা ও সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী সিনহা রাশেদের মাকে ফোন করেন।প্রধানমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাশেদের মাকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন বলে নিহত রাশেদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা।ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।তবে ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। রাশেদ আদৌ অস্ত্র তাক করেছিলেন কি না, তা নিয়ে যেমন সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তেমনি পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। যিনি সেদিন গুলি ছুড়েছিলেন, সেই পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ২০ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।এই ঘটনায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাত নামে এক যুবকের ভাষ্য দিয়ে বলা হয়েছে, ‘কোনোরূপ জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই মেজর (অব.) সিনহার বুকে একে একে তিনটি গুলি ছোড়েন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী।’

সিফাতের বরাত দিয়ে ওই ঘটনার ভিন্ন একটি বয়ান এসেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে, যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।সেখানে বলা হয়, পুলিশের নির্দেশে গাড়ি থেকে হাত উঁচু করে নেমে যান সিফাত। পরে সিনহাও নিজের পরিচয় দিয়ে হাত তুলে গাড়ি থেকে বের হন।

এদিকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত ওই তদন্ত কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল থেকে কক্সবাজারের হিলডাউন সার্কিট হাউজে ছয় ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক করেন।তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক পরে সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত দলের সদস্যরা ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন। এতে তদন্তদলের নির্দিষ্ট কর্ম-পরিকল্পনা তথা কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি:ঢাকা প্রতিনিধির পাঠানো।


Share
Published 5 August 2020 1:49pm
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends