ভিক্টোরিয়া রাজ্যে বাড়ছে গৃহহীন নারীদের সংখ্যা, আবাসন সুবিধা দিতে সরকারের প্রতি আহবান

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা গৃহ বিবাদের ফলে অনেক নারী ঘর ছাড়ছেন, আর তাদের উপযুক্ত আবাসন ব্যবস্থা করতে ভিক্টোরিয়া রাজ্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি সামাজিক সংস্থা। প্রায় চার বছর আগে ফ্যামিলি ভায়োলেন্স নিয়ে গঠিত রাজ্যের রয়েল কমিশন চিহ্নিত করেছে যে আবাসনের অভাবই গৃহহীনতার মূল কারণ।

Family violence (Picture representational only)

Frustrated of little girl is disaster in argument of mother and father in family conflict (Picture representational only) Source: Getty Images

ফোবি তার পুত্রসন্তান হওয়ার দুবছর পর বিবাদপূর্ণ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। 

তিনি বলেন, "ঘরের বাইরে থাকা আরো খারাপ হলেও অন্তত ঐসব অত্যাচারগুলো তো আর সহ্য করতে হচ্ছে না।  এমন সব অত্যাচার আমাকে সহ্য করতে হয়েছে তা হয়তো আপনারা ভাবেন না, মানুষ শুধু শারীরিক অত্যাচারের কথা ভাবে, কিন্তু আবেগকে আঘাত দেয়া, আর্থিক অনটন এগুলোও অত্যাচার। "

কিন্তু ঘর ছেড়ে তিনি গৃহহীন হয়ে পড়েন। মানুষের সোফায় কিংবা ক্রাইসিস একোমোডেশন এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাকে থাকতে হতো।

ফোবি বলেন, কখনো কখনো একটা খারাপ অবস্থা থেকে আরেকটা আরো খারাপ অবস্থায় আপনাকে পড়তে হয়। 

তিনি বলেন, "এমন সব জায়গায় থেকেছি যার মূল দরজা ভাঙ্গা, আমার ছেলের জন্মদিনে আমার জিনিস চুরি হয়ে গেলো, তো এর মাধ্যমে একটা অনিরাপদ পরিবেশ বিরাজ করে, আবার আপনি সেই জায়গা ছেড়ে গিয়ে যেখানে যাবেন সেটাও হয়তো অনিরাপদ।"

এই যখন অবস্থা তখন ফ্যামিলি ভায়োলেন্স এবং গৃহহীনদের জন্য কাজ করে এমন প্রায় ৮০ টি সংস্থার সিইও এক যৌথ বিবৃতিতে ভিক্টোরিয়ান সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সামাজিক এবং গণআবাসনের জন্য আরো বরাদ্দ বাড়ানোর। 

২০১৬ সালে ভিক্টোরিয়ার রয়েল কমিশনের করা সুপারিশের পর থেকে দেখা যায় যে পারিবারিক বিবাদের ফলে গৃহহীন হয়ে যাওয়ার ঘটনা আরো বেড়েছে।

 কাউন্সিল অফ হোমলেস পারসনস-এর কেইট কোলভিন বলেন, যে সংখ্যাটি পাওয়া গেছে তা উদ্বেগজনক। 

তিনি বলেন, "প্রতিদিন ৩২ জন করে নারী পারিবারিক বিবাদ থেকে বাঁচতে গৃহহীন হয়ে পড়ছেন এবং সাহায্য চেয়েও প্রায় ২০ জন কোন ঘর পাচ্ছেন না।  এতে ঐসব নারীরা হয়তো আবার ঘরে ফিরে গিয়ে সহিংসতার মধ্যে পড়ছেন। "

তবে এই বিষয়টি জাতীয়ভাবেও একই ব্যাপার প্রতিফলিত করে, মেয়েদের গৃহহীন হওয়ার এক নম্বর কারণ হচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা। 

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স ভিক্টোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত সি ই ও এলিসন মেকডোনাল্ড বলেন, সিস্টেমটি ব্যাপক চাপের মধ্যে আছে। 

যদিও তিনি বলেন রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে কাজের জন্য প্রশংসা করেন, তবে আরো বহুদূর যেতে হবে। 

ভিক্টোরিয়া সরকার বলছে পারিবারিক সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের আবাসনের ব্যবস্থা করা তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় আছে, এবং রাজ্যজুড়ে তারা নতুন নতুন আবাসনের বেশ কিছু ব্যবস্থাও তারা করছে। 

তারা রয়েল কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু অর্থ এই সেক্টরে  বিনিয়োগ করেছে।

ফোবি সোশ্যাল হাউজিংয়ে প্রায় চার বছর ধরে থাকছেন। 

তিনি বলেন, তিনি ও তার ৭ বছরের ছেলে যদি একটি ঘর পেতেন তবে এর চেয়ে  ভালো অনুভূতি  আর কিছু হতো না। 

"একটা স্থায়ী জায়গা যেখানে আমার ছেলে আমাকে প্রতিদিন বলবে 'আমি বাড়ি আসছি', এর চেয়ে দারুন অনুভূতি আর কি হতে পারে।"

আরো পড়ুন: 

Share
Published 10 March 2020 7:00pm
By Gloria Kalache
Presented by Shahan Alam

Share this with family and friends