অ্যাডিলেইড পাইলট প্রোগ্রামকে স্বাগত জানালেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমর্থক-গোষ্ঠী

ভিক্টোরিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় এসিটি-তে জুলাই মাসে বাতিল করা হয় এ রকম একটি উদ্যোগ।

International students exploitation

International students set to return to Canberra (Representational image). Source: Flickr

করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে অস্ট্রেলিয়ার উচ্চশিক্ষা খাত গতিশীল করার জন্য নতুন একটি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ৩০০ শিক্ষার্থী অ্যাডিলেইডে আসবে। প্রোগ্রামটিকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমর্থক-গোষ্ঠীগুলো।

চীন, জাপান, হংকং এবং সিঙ্গাপুর থেকে শিক্ষার্থীরা সাউথ অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী অ্যাডিলেইডে আসবেন আগামী মাসের শুরুর দিকে।

অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটোরিতে একই রকম একটি স্কিমের মাধ্যমে ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা ভিক্টোরিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র হওয়ায় জুলাই মাসে হয়।

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বছরে প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখে। তবে, গত মার্চ মাস থেকে সীমান্ত-নিষেধাজ্ঞার কারণে ফি-প্রদানকারী হাজার হাজার শিক্ষার্থী ফিরে আসতে পারছে না।
স্টুডেন্ট জবস অস্ট্রেলিয়ার কো-ফাউন্ডার বিজয় সাপকোটা এসবিএস নিউজকে বলেন,

“বিদেশে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য (এই প্রোগ্রামটি) খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। তারা আসলেই মরিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পড়াশোনা করতে চায়।”

“অনেকেই অনলাইনে কোর্স করছে ... তবে তাদের মধ্যে অনেকেই তাদের প্রদান করা উচ্চ হারের ফিজ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তারা বাস্তব পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না।”

স্টাডি অ্যাডিলেইডের সিইও ক্যারিন কেন্ট বলেন, সীমান্ত যখন বন্ধ করা হয় তখন বহু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বিদেশে আটকা পড়েছেন। তাদের কোর্স সম্পন্ন করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ।

এসবিএস নিউজকে তিনি বলেন,

“বহু শিক্ষার্থীকে তাদের কোয়ালিফিকেশন সম্পন্ন করার জন্য প্লেসমেন্ট, প্র্যাক্টিকাল এবং ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে। আর, এগুলো অনলাইনে করা যায় না।”

গত রবিবার এই প্রোগ্রাম ঘোষণা করার সময়ে ট্রেড মিনিস্টার সায়মন বার্মিংহ্যাম বলেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হবে যে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে ফেরত আনার বিষয়টি জাতীয়ভাবে ব্যবস্থা করা যাবে কিনা।

সমস্ত আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর মতোই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ায় আগমনের পর আবশ্যিক সুপারভাইজড কোয়ারেন্টিনে তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে পাঠানো হবে। এর খরচ বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

রবিবার সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার স্টিভেন মার্শাল বলেন, অ্যাডিলেইডের বৈচিত্রের পেছনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অবদান রয়েছে।

“আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আমাদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা আমাদের রাজ্যে বহু-সংস্কৃতির পেছনে ভূমিকা রাখছে।”

প্রিমিয়ার বলেন, রাজ্যটি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে ফেরত আনার ক্ষেত্রে “দ্রুত অগ্রসরমান হিসেবে আদর্শ অবস্থানে” রয়েছে।

তবে এই স্কিমটি নিয়ে এবং সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় থাকা তাদের পরিবারগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, ইতোমধ্যে আকাশ ছোঁয়া টিকিটের মূল্য আরও বাড়বে।

আরও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শিক্ষার্থীরা ফেরত এলে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থায় আরও চাপ বাড়বে। এছাড়া, প্রতি সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ায় আসা যাত্রীদের যে কোটা রয়েছে, তাতেও এর প্রভাব পড়বে। অ্যাডিলেইডে বর্তমানে সপ্তাহে ৫০০ জনের কোটা রয়েছে।

সিনেটর বার্মিংহ্যাম রবিবার টুইটারে বলেন, সাউথ অস্ট্রেলিয়া কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ব্যবস্থা করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
মিস্টার সাপকোটা বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। তারা করদাতাদের উপরে বোঝা নয়। যারা এই প্রোগ্রামটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন, তাদের প্রতি তিনি বলেন সামগ্রিকভাবে এটি কীভাবে কমিউনিটির উপকারে আসবে তা বিবেচনা করতে।

তিনি বলেন,

“মানুষের অবশ্যই উচিত উপকারগুলো বিবেচনা করা।”

“উচ্চশিক্ষা খাতে হাজার হাজার কর্ম-সংস্থানে সহায়তা করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা, তাদের উচ্চ হারের ফিজ-এর মাধ্যমে। পর্যটন ও হসপিটালিটির মতো অন্যান্য খাতগুলোও আমার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দ্বারা আনীত অর্থের উপর নির্ভর করে।”

মিজ কেন্ট বলেন, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি চার জন বিদেশী শিক্ষার্থীর জন্য নতুন একটি করে কাজের সুযোগ তৈরি হয়।

অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা অবদান রাখে, বলেন তিনি।

“আমাদের এডুকেশন কমিউনিটিতে বড় অবদান রাখে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। আমাদের বৈশ্বিক অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের বন্ধন দৃঢ় করে। আর, আমাদের আন্তর্জাতিক গবেষণা ও অধ্যয়ন-প্রচেষ্টায় সহায়তা করে।”
Social title Masks Bangla
Source: SBS
অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জন-সমাগমের সীমা সম্পর্কে জানতে আপনার রাজ্যের নিষেধাজ্ঞাগুলো দেখুন।

আপনার মাঝে যদি সর্দি-কাশির (কোল্ড কিংবা ফ্লু) লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ঘরে অবস্থান করুন এবং আপনার ডাক্তারকে কল করে কিংবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন, 1800 020 080 নম্বরে কল করে টেস্টের ব্যবস্থা করুন।

আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।

৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পেতে ভিজিট করুন: .

বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন:

Follow SBS Bangla on .


Share
Published 18 August 2020 3:40pm
Updated 18 August 2020 3:42pm
By Caroline Riches
Presented by Sikder Taher Ahmad


Share this with family and friends