অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনে বাংলাদেশীরা কেন পিছিয়ে আছে?

অন্যান্য ভিসায় পিছিয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী অভিবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশীরা যে দিক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে সেটা হলো পয়েন্ট টেস্টেড স্কিলড মাইগ্রেশন।

Skills Migration Program for the 2021-22 financial year

Skills Migration Program for the 2021-22 financial year Source: SBS

সম্প্রতি ২০১৯-২০ সালের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের নানা তথ্য প্রকাশ করেছে সরকার। এতে দেখা যায়, এই অর্থ-বছরে পার্মানেন্ট মাইগ্রেশন ভিসা প্রদান করা হয় ১৪৪,৩৬৬ টি। এগুলোর ৭০ শতাংশই (সর্বমোট ৯৫,৮৪৩ টি) ছিল স্কিলড স্ট্রিমের। আর, ৩৭,১১৮ টি পার্টনার ভিসাসহ ফ্যামিলি প্রোগ্রামের অধীনে প্রদান করা হয় ৪১,৯৬১ টি ভিসা।
2019-20 Migration Program Outcome
2019-20 Migration Program Outcome Source: Department of Home Affairs
পার্মানেন্ট ভিসার তিন ভাগের দুই ভাগই প্রদান করা হয় অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত অস্থায়ী ভিসাধারীদেরকে।

২০২০-২১ সালের মাইগ্রেশন এবং হিউম্যানিটেরিয়ান প্রোগ্রামের আকার নির্ধারিত হবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। এটি ঘোষিত হবে অক্টোবরের ফেডারাল বাজেটের সময়ে।

ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সের মতে, স্থায়ী ভিসা পাওয়া ব্যক্তিদের দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় দেশগুলো হচ্ছে: ভারত (২৫,৬৯৮ টি প্লেস), চীন (১৮,৫৮৭ টি প্লেস), যুক্তরাজ্য (১০,৬৮১ টি প্লেস), ফিলিপিন্স (৮,৯৬৫ টি প্লেস), ভিয়েতনাম (৫,৩৯৮ টি প্লেস), নেপাল (৫,০৪৮ টি প্লেস), নিউ জিল্যান্ড (৪,৯৯৭ টি প্লেস), সাউথ আফ্রিকা (৩,৭৪৩ টি প্লেস) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৩,৩০১ টি প্লেস)।
Migration Program Outcome: 2019 - 20 Top 10 countries by stream
Migration Program Outcome: 2019 - 20 Top 10 countries by stream. Source: Department of Home Affairs
অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী অভিবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশীরা যে দিক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে সেটা হলো পয়েন্ট টেস্টেড স্কিলড মাইগ্রেশন। ডিপার্টমেন্ট অফ ইমিগ্রেশনের সর্বশেষ বাংলাদেশের অবস্থান ১৪ নম্বরে। ফ্যামিলি অ্যান্ড চাইল্ড মাইগ্রেশন এবং এমপ্লয়ার স্পন্সর্ড পার্মানেন্ট মাইগ্রেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রথম ২০ টি দেশের মধ্যে নেই। তাই, সব মিলিয়ে টোটাল স্কিল মাইগ্রেশনে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়ে গিয়ে ২০ নম্বরে চলে গেছে।

অস্ট্রেলিয়ায় অস্থায়ী অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রথম বিশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নেই। স্টুডেন্ট ভিসা, টেম্পোরারি রেসিডেন্ট (স্কিলড) ভিসা এবং ভিজিটর ভিসা, কোনো তালিকাতেই বাংলাদেশ শীর্ষ ২০ টি দেশের মধ্যে নেই।

পয়েন্ট টেস্টেড স্কিলড মাইগ্রেশনে বাংলাদেশের কিছুটা এগিয়ে থাকার কারণ কী? এ সম্পর্কে রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্ট কাউসার খান বলেন,

“এই দেশের স্কিল মাইগ্রেশন যখন শুরু হয়েছে তখন থেকে, বিশেষত ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি স্টুডেন্ট ভিসা পেত।”
Migration Program Outcome based on the stream, country-wise
Migration Program Outcome based on the stream, country-wise Source: Department of Home Affairs
“তখন বাংলাদেশের ভাল ভাল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো এর স্বীকৃতি লাভ করে। এছাড়া, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মও অনেক স্মার্ট। তাদের একটা অংশ ইংরেজি শিক্ষার প্রতিও গুরুত্ব দেয় এবং অস্ট্রেলিয়ার চাহিদা অনুসারে নিজেদেরকে প্রস্তুত করে। ফলে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের স্টুডেন্ট ভিসা লাভ এবং পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি লাভেরও সুযোগ ঘটে। তাই তারা অনশোর এবং অফশোর উভয় ক্ষেত্রেই পয়েন্ট স্কিলড ভিসা বেশি পাচ্ছে।”

“ওয়ার্ক স্পন্সর এর ক্ষেত্রে কিন্তু এটা হচ্ছে না। বাংলাদেশের কর্মীদের যে স্ট্যান্ডার্ড, তা অনেক সময় অস্ট্রেলিয়ার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না। আর যদি কোনো ক্ষেত্রে তা হয়েও থাকে, সেসব কর্মী তখন ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার অভাবে ভিসা পাওয়ার উপযুক্ত হন না।”

বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি করার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করায় ব্যর্থতা, বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্ট্রেলিয়ান স্বীকৃতি না থাকা এবং মূলত ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা না থাকাকে দায়ী করেন কাউসার খান।

“বাংলাদেশের কর্মীরা ভাল কাজ জানার পরও ইংরেজি ভাষায় প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পারেন না।”

“বাংলাদেশের পলিটেকনিক ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটগুলো এখনও অস্ট্রেলিয়ান স্টান্ডার্ড অর্জন করতে পারে নি। এগুলো রিকগনিশন করাতে হবে।”

বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়গুলো সমাধান করতে সক্ষম হয়,  তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশী দক্ষ কর্মীদের আগমন অনেক বেড়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে মনে করেন কাউসার খান।

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 22 September 2020 1:43pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends