ফ্লু রোধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়ের ড্রাগ আবারো ব্যবহারের প্রত্যাশা

Are the COVID-19 vaccines safe for children?

Doctor giving an injection to patient in ward at hospital Source: iStockphoto

গবেষকরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি ড্রাগের সন্ধান পেয়েছে যা ফ্লু জনিত মৃত্যু রোধে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এটা এমন সময়ে খুঁজে পেলেন যখন এ বছর অন্তত ৩০০ ব্যক্তির ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এবারের ফ্লু সিজনটি অনেকটা আগেভাগেই শুরু হয়েছে।


প্রবেনাসিড নামের এই ড্রাগটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের ক্ষত সারাতে ব্যবহৃত হতো।  

এটি তখন সেসময়কার নতুন আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিনের প্রয়োগকে  দীর্ঘায়িত করেছিল।

৭৫ বছর পর, বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন যে এটি নতুন করে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্লু ভাইরাসের আক্রমণে যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে তা থেকে পরিত্রান পেতে এটি হতে পারে একটি মোক্ষম অস্ত্র।

মেলবোর্নের হাডসন ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল রিসার্চ -এর বিজ্ঞানীরা দুটি সম্ভাব্য এন্টি-ফ্লু ওষুধ নিয়ে গবেষণা করেছেন যার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রোবেনিসিড।

ড: মিশেল টেট, যার গবেষণা বিখ্যাত ব্রিটিশ জার্নাল অফ ফার্মাকোলজিতে প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি এই ড্রাগের সম্ভাব্য প্রয়োগের ব্যাপারে দারুন আশান্বিত। এটি বর্তমানে গাউটের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।

এবং তাই এই ড্রাগটি মানুষের শরীরের টিসু এবং অন্যান্য অর্গানগুলোকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।  

দ্বিতীয় যে ড্রাগটি বিশ্লেষণ করা হয়েছে তার নামটি খুব আকর্ষণীয় নয়, এটি  AZ11645373 নাম পরিচিত।  

এটি বর্তমানে আর্থ্রাইটিসের মতো প্রদাহজনক রোগের চিকিত্সার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে  ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু গবেষকরা বলছেন এই ড্রাগটিও ফ্লু যুদ্ধে সাহায্য করতে পারে।

ডাঃ টেট বলেন, দুটো ড্রাগই এটিপি রিসেপ্টর পি 2 এক্স 7 কে নিরাময় করে। এই এটিপি রিসেপ্টর এক ধরণের মলিকিউল  যা মানুষের  প্রদাহজনিত রোগের ক্ষেত্রে বড়ো ভূমিকা পালন করে।

এটি মানুষের ব্যবহারের জন্য ইতিমধ্যেই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাব প্রায়শঃই যেভাবে মারাত্মক হয়ে উঠছে, সে প্রেক্ষিতে ফ্লু চিকিৎসায় এই ড্রাগটি বড় ধরণের নিয়ামক হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডঃ টেট বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় ফ্লুয়ের মৌসুম আগে ভাগেই শুরু হয়েছে।  

এ বছর বিশেষ করে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় ফ্লুয়ের আক্রমণ  বেশি হয়েছে। 

আক্রান্তদের মধ্যে এ বছর অন্তত ৮২ জন মারা গেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই বয়সে বৃদ্ধ। এ পর্যন্ত ফ্লু সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় ২০,০০০। গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যাটি ছিল ১৫০০।

বিরোধীদল জরুরি ভিত্তিতে সরকারের ফ্লু সিজন মোকাবেলা এবং পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যাপারে  রিভিউ আহবান করেছে।  

দেশব্যাপী, আনুমানিক ৩০০ জন মানুষ ফ্লু থেকে মারা গেছে বলে ধারণা করা হয়, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন কিছু ভাল খবর রয়েছে।

তারা বলছেন যেহেতু ফ্লু সিজন আগে ভাগে শুরু হয়েছে, তাই আশা করা যায় যে শীঘ্রই এই সংখ্যা হ্রাস পাবে। 


Share