লাকেম্বায় মৃত মহসিনের লাশ বাংলাদেশে পাঠানো হবে

Mohammad Mohsin Biswas

Mohammad Mohsin Biswas. Source: Supplied

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

গত ২০ অক্টোবর সিডনির লাকেম্বায় বাংলাদেশী যুবক মোহাম্মদ মহসিন বিশ্বাসের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃতদেহের ময়না তদন্তের পর তার লাশ ফেরত দেওয়া হলে লাশটি বাংলাদেশে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন কেন্টারবেরি-ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের বাংলাভাষী কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহে জামান টিটু। এসবিএস বাংলার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। আরও কথা বলেছেন এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিডনিতে বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল অফিসের কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম, সমাজসেবক কাজী খালেকুজ্জামান আলী এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের একমাত্র লায়ন সংগঠন শাপলা-শালুক লায়ন্স ক্লাব, ডিস্ট্রিক্ট ২০১ এন ৫ অস্ট্রেলিয়া এর প্রেসিডেন্ট লায়ন ড. মইনুল ইসলাম।


গত ২০ অক্টোবর সিডনির লাকেম্বায় এক বাংলাদেশী যুবকের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ নিয়ে যায় এবং তারপর লাশের যা-করণীয় তা তারা করে কয়েক দিনের মধ্যে হয়তো লাশটা তারা বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ফেরত দিবে।

পারিবারিক দাবি অনুযায়ী এই লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন ঐ এলাকার কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহে জামান টিটু। আরও আছেন লায়ন ড. মইনুল ইসলাম, প্রেসিডেন্ট শাপলা-শালুক লায়ন্স ক্লাব, ডিস্ট্রিক্ট ২০১ এন ৫ অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের এটাই একমাত্র লায়ন সংগঠন।

আরও আছেন কাজী আলী, যিনি মৃতদেহ সৎকারের ও দাফনের ব্যাপারে সবসময় এগিয়ে আসেন।

এছাড়া, সিডনিতে বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল অফিসের কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলমও এক্ষেত্রে সহায়তা করছেন। কীভাবে এই লাশটি বাংলাদেশে পাঠানো যায়, দেশে পাঠানোর জন্য যে কাগজপত্র দরকার, যে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সে সমস্ত বিষয় তারা দেখছেন।
Mohammed Shahe Zaman Titu
Councillor Mohammed Shahe Zaman Titu, Canterbury-Bankstown City Council. Source: Supplied
কেন্টারবেরি-ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের বাংলাভাষী কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহে জামান টিটু বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা।

“যে কাজটা সে করেছে, একদিনে এ কাজটা সে সিদ্ধান্ত নেয় নি।”

“আমার মনে হয়, আমরা যারা প্রবাসে আছি, আমরা আমাদের ব্যস্ততম জীবনের মাঝেও কিছুটা সময় কমিউনিটিকে আরেকটু দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।”

মহসিন বিশ্বাস, ৩২ এর মৃত্যুর পর কাউন্সিলর টিটু বাংলাদেশী কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন,

“আমরা কমিউনিটির কিছু লোক, দারুল উলুমের কমিটির লোকদের সাথে এবং শাপলা-শালুক, অস্ট্রেলিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশী লায়ন্স ক্লাব, তাদের সাথে আমি কয়েকবার বসেছিলাম এই বিষয়টা নিয়ে। সবাই সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে এবং সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন বাংলাদেশে লাশ পাঠাতে অনেক বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন।

“লাশ যদি দেশে পাঠাতে হয় তাহলে বিশাল অ্যামাউন্টের প্রয়োজন। ৮ থেকে ১০ হাজার ডলার খরচ হয়।”

“প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্তে আসি যে, ফান্ড রেইজ হলে রুটি হিল মসজিদে একটা জানাজা হবে। এরপরে আমরা দারুল উলুম, সে যেখানে আত্মহত্যা করেছিল সেখানে আমরা আরেকটা জানাজা করবো। এরপরে [লাশ] দেশে পাঠাবো। এটা ফাইনাল সিদ্ধান্ত না, এটা প্রাথমিকভাবে নেওয়া হয়েছে।”

“লাশ রিসিভ করার পর কমিউনিটির মুরুব্বী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তখন সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়।”
Khandker Masudul Alam
Khandker Masudul Alam, Consul General, Consulate General of Bangladesh, Sydney, NSW, Australia. Source: Supplied
সিডনিতে বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল অফিসের কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম বলেন, যেদিন ঘটনাটি ঘটে সেদিন সকালেই স্থানীয় পুলিশ বিভাগ থেকে কনসুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা কনসুলেটকে ঘটনাটি জানায়।

তিনি বলেন,

“যেহেতু এটা একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু, সেহেতু পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজন ছিল তার নিকট আত্মীয়র কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার, যাতে করে তারা অটপ্সি (ময়না তদন্ত) করে একটি চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে।”

“প্রাথমিক যে কাগজপত্র তার সঙ্গে পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেশে তার আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে বের করেছি।… তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে সময়ে সময়ে পুলিশের এ জাতীয় যে-সব অনুমতির প্রয়োজন আমরা সেগুলো যোগাড় করছি এবং সেগুলো তাদেরকে দিচ্ছি।”
Catholics offer burial spaces to Muslims
Kazi Khalequzzaman Ali at Rookwood Cemetery. Source: SBS Bangla
কাজী আলী বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ। যে-কোনো মৃতদেহের সৎকার থেকে আরম্ভ করে দাফন-কাফন সব কাজে এগিয়ে আসেন তিনি। তিনি বলেন,

“জানাজাটা মোস্ট প্রবাবলি রুটি হিলে করতে হবে”, কারণ, মৃতদেহ ধোয়ানোর কাজটা ব্লাকটাউনে করা হবে, বলেন তিনি।

বাংলাদেশে লাশ পাঠানোর জন্য ফান্ড রেইজ করাটা বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না বলে মনে করেন তিনি।

“এই টাকাটা খুব কুইকলি উঠে যাবে”, বলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের একমাত্র লায়ন সংগঠন শাপলা-শালুক লায়ন্স ক্লাব, ডিস্ট্রিক্ট ২০১ এন ৫ অস্ট্রেলিয়া। এর প্রেসিডেন্ট লায়ন ড. মইনুল ইসলাম বলেন,

“আমরা লিখিতভাবে মহসিনের মা এবং বড় ভাইয়ের কাছ থেকে রিকোয়েস্ট পেয়েছি, আন-কন্ডিশনাল অথরাইজেশন পেয়েছি এ ব্যাপারে কাজ করার জন্য।”

“আমরা খুব স্ট্রিক্ট আমাদের পলিসির ব্যাপারে।”

“আমরা ট্রান্সপারেন্সিকে খুব গুরুত্ব দেই।”

“আমরা কোনো ক্যাশ গ্রহণ করি না। যা কিছু হবে, ব্যাংকে ডাইরেক্ট ডিপোজিটের মাধ্যমে হবে।”

তাদের সাক্ষাৎকারগুলো বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .


Share