প্রসঙ্গ সুদ হার বৃদ্ধি - কিন্তু এতে কী মূল্যস্ফীতি কমবে?

PHILIP LOWE AMCHAM ADDRESS

Australia saw some of its lowest interest rates throughout the COVID-19 pandemic, with the Reserve Bank initially saying they didn't plan on raising cash rates until 20-24. Source: AAP / DAN HIMBRECHTS/AAPIMAGE

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফিশিয়াল ক্যাশ রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে, এতে টানা পঞ্চমবারের মত সুদ হার বাড়লো। গত এক দশক ধরে ঋণগ্রহীতাদের একটি প্রজন্ম কম বা স্থিতিশীল সুদের হার পেয়ে আসছিল - কিন্তু এখন তারা পর্যায়ক্রমে হার বৃদ্ধির চাপ মোকাবেলা করছে।


মূল দিকগুলো
  • অফিসিয়াল ক্যাশ রেট এখন ১.৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২.৩৫ শতাংশ
  • সুদ হার বৃদ্ধি অনেক পরিবারের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে
  • কেউ কেউ প্রপার্টি মার্কেটে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন
অনেক অস্ট্রেলিয়ান পরিবার ইতিমধ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাপ অনুভব করছে, তার উপর আরবিএ (R-B-A)-এর সুদ বৃদ্ধির নতুন ঘোষণা এই চাপ আরো বাড়াবে সন্দেহ নেই।

জোনাথন এবং এলিজাবেথ ওয়েবস্টারের পরিবারে তাদের বাচ্চারা ছাড়াও আছে একটি গৃহপালিত কুকুর।

তারা তাদের ১৭ বছর বয়সী মেয়ের জন্মদিন উদযাপনের পরিকল্পনা করছে।

কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ অস্ট্রেলিয়ার গত কয়েক মাসের মধ্যে টানা পঞ্চমবারের মত সুদ হার বৃদ্ধির ঘোষণার ফলে এখন তাদের এই ধরণের খরচগুলি এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় এখন আকাশছোঁয়া।

বোর্ড গত মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে, সুদের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, অফিসিয়াল নগদ হার এখন ১.৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২.৩৫ শতাংশ হয়েছে।

এর পরেই প্রতিক্রিয়ায় ফেডারেল ট্রেজারার জিম চালমার্স বলেন, এই ঘোষণার ফলে পারিবারিক বাজেট আরো সংকুচিত হয়ে আসবে। এটি অনেক অস্ট্রেলিয়ানদের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

ওয়েবস্টার পরিবার সেই অস্ট্রেলিয়ান পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম যারা এই চাপ কিভাবে সামলাবেন তা ভাবছেন।

তিনি বলছেন,"আমরা হয়তো কফি কেনা কমিয়ে দেব, অনলাইন স্ট্রিমিং কমিয়ে দেব, পেট্রলের দাম বেড়ে গেছে, তাই গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারি, এবং কিছুও সঞ্চয়ও করতে পারি।"
১২ বছর আগে তারা যখন তাদের বাড়িটি কিনেছিল, তখন সুদ হার ছিল ৭.৫ শতাংশ, এবং এখন তারা উদ্বিগ্ন যে সুদ হার আবার সেই দিকেই যাচ্ছেন।

আর্থিক পরামর্শ কোম্পানি দ্য মটলি ফুলের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা স্কট ফিলিপস বলেছেন, এই সুদের হার বৃদ্ধির ফলে গড়ে মর্টগেজ পেমেন্ট বাড়বে মাসে অতিরিক্ত প্রায় ৩০০ ডলার।

কিছু অর্থনীতিবিদ সতর্ক করে বলেছেন যে সাম্প্রতিক সময়ের এই হার বৃদ্ধির সম্পূর্ণ প্রভাব এখনও দেখা যায়নি, অনেক ঋণগ্রহীতা মাত্র প্রথম দুটি হার বৃদ্ধির প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছেন।স্কট ফিলিপস বলেছেন যে অদূর ভবিষ্যতে এই হার কমার সম্ভাবনা কম।

তিনি বলছেন,"বাস্তবতা হল, বাকি বিশ্বের চেয়ে মূল্যস্ফীতি আমাদের তুলনায় এখনো কিছুটা কম। তাই আরবিএ যতক্ষণ না মুদ্রাস্ফীতির হুমকি কমছে, ততক্ষন সুদ হার নিয়ে সহজ কিছু ভাবছে না।"

এখন সকলের দৃষ্টি থাকবে অক্টোবরের বাজেটের দিকে, যা আগামী মাসে নতুন লেবার সরকার ঘোষণা করতে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজি বলেছেন, সরকার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চায়।

তিনি বলছেন, " জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে আইন কাঠামোর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে, যার মধ্যে আছে সস্তায় ওষুধ সরবরাহ এবং শিশুদের যত্নসহ কিছু ব্যবস্থা।...এবং আমরা এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাই যা জীবনযাত্রার ব্যয় হ্রাস করবে।"

তবে, বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটন সরকারকে আরও কিছু করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলছেন, "অস্ট্রেলিয়ানরা লেবার পার্টিকে ভোট দিয়েছিল এই বিশ্বাস করে যে জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে তাদের সাহায্য করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এর সবই ছিল অনুমান। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে তার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বিদ্যুতের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এবং এখন অস্ট্রেলিয়ানরা জানছে যে তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। আসলে তার উল্টোটা ঘটেছে। লেবার সরকারের অধীনে বিদ্যুতের দাম আরো বাড়ছে।"

অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড মহামারীর সময় সর্বনিম্ন সুদের হার ছিল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রাথমিকভাবে বলেছিল যে তারা ২০২৪ পর্যন্ত নগদ হার বাড়ানোর চিন্তা নেই।

গ্রিনস সেনেটর নিক ম্যাককিম বলেছেন যে সুদের হার বাড়ানো উচিত ছিল না এবং তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ফিলিপ লোইকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলছেন,"ডঃ লোইকে সরে যেতে হবে। তিনি ভাড়াটিয়াদের ধ্বংস করছেন। তিনি মর্টগেজধারীদের ধ্বংস করছেন। তিনি ঋণগ্রস্ত ছোট ব্যবসার মালিকদের ধ্বংস করছেন। অথচ তিনি বলেছিলেন যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সুদের হার বাড়বে না।"
তবে মটলি ফুলের স্কট ফিলিপস বলেছেন বর্তমান অবস্থায়, আরবিএ (R-B-A)-এর রেট বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।

এদিকে যখন মর্টগেজধারী লোকেরা কষ্ট পাচ্ছে, তখন সঞ্চয়কারীরা - যেমন পেনশনভোগীরা - সুদের হার বৃদ্ধিকে স্বাগত জানাচ্ছে। কারণ এর আগে তাদের সঞ্চয় থেকে তারা খুব কম লাভ করত।

এদিকে প্রপার্টি ল' ইয়ার রিচার্ড চিডিয়াক, প্রপার্টি মার্কেটে বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে পরামর্শ দিয়েছেন।

মর্টগেজ চয়েস-এর মর্টগেজ ব্রোকার চ্যান্টেল রাইনজেল বলেছেন যে এই সমস্যাটি চিরকাল থাকবে না।

তিনি বলছেন, এই মুহূর্তে এটি হয়তো কিছুটা ভীতিকর, কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে এই অবস্থা স্বল্পমেয়াদি। তারা বলছেন যে মুদ্রাস্ফীতি কমে আসবে শিগগিরই।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 



Share