আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ বিনিয়োগকারীদের সুপার ফান্ডের অর্থের হ্রাসবৃদ্ধি নিয়ে আতঙ্ক বা অস্থিরতার কোন কারণ নেই

Superannuation withdrawal scheme: So far, $13.2bn has been withdrawn from retirement funds.

Superannuation withdrawal scheme: So far, $13.2bn has been withdrawn from retirement funds. Source: Getty Images/Jules Ingall

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

কভিড ১৯ মহামারীর এই সময়ে সুপার ফান্ডসহ বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে আছেন পার্থের এডিথ কাউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের (Edith Cowan University) ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিংয়ের লেকচারার ডঃ তন্ময় চৌধুরী। তিনি এসবিএস বাংলার শ্রোতাদের ব্যাখ্যা করবেন যে সুপার অ্যাকাউন্টধারীরা কী করছে, তারা কেন করছে এবং এটি কী ভাল ধারণা?


অস্ট্রেলিয়া এমন একটি দেশ যেখানে আইন অনুসারে নিয়োগদাতাদের জন্য তাদের কর্মীদের সুপারএনুয়েসন ফান্ডে অর্থ প্রদান বাধ্যতামূলক। প্রতিটি করদাতার সুপার পোর্টফোলিওতে একটি উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে। তবে বর্তমানে  বিশ্বব্যাপী মহামারী পোর্টফোলিওর রিটার্নে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলেছে। এটি বিনিয়োগকারীদের বিশেষত অভিবাসীদের আস্থাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে এবং তাদের বিনিয়োগ চিন্তায় আতঙ্ক ও অস্থিরতা কাজ করছে। প্রশ্ন হচ্ছে এটি ভাল না খারাপ?

মহামারীর এই সময়ে সুপার ফান্ডসহ বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে আছেন পার্থের এডিথ কাউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের (Edith Cowan University) ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিংয়ের লেকচারার ডঃ তন্ময় চৌধুরী। 

ডঃ তন্ময় চৌধুরী, এসবিএস বাংলায় আপনাকে স্বাগত

ধন্যবাদ 

আমরা জানি সুপারএনুয়েসন ফান্ডে বিনিয়োগ অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে মহামারী চলাকালীন সুপার অ্যাকাউন্টধারীরা তাদের বিনিয়োগের অর্থ হারাচ্ছেন এবং এতে আতংকিত হয়ে অন্য খাতে বিনিয়োগ করছেন, স্পষ্টতই এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে তাদের মধ্যে, এসবিএস বাংলার শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলবেন কি তাদের পক্ষে সেরা বিনিয়োগের নীতিটি কী হওয়া উচিত? 

প্রথমেই বলতে চাই এখানে আতংকিত হবার বিন্দুমাত্র কিছু নেই, আমরা সবাই জানি এখন মহামারী চলছে এবং এসময় বেশ কিছু বিনিয়োগকারী অর্থ হারাবেন। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে সুপার একাউন্টে বিনিয়োগ শুধু এক বছরের বিনিয়োগ নয়, এটা দীর্ঘমেয়াদি, আপনাকে ৩০ বছরের চিন্তা করতে হবে, আপনি এখন যাই হারাবেন, ভবিষ্যতে তা ফিরে পাবেন।  এ মুহূর্তে আমরা যেটা দেখছি, অস্ট্রেলিয়ান মার্কেট সারা বিশ্বের মার্কেটগুলোর অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে স্হিতিশীল এবং শক্তিশালী।  আমি আশা করছি যখন আগামী ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে যখন মহামারী কেটে যাবে তখন আপনি এখন যা হারাবেন তার চেয়ে দ্বিগুন বা তিনগুন ফেরত পাবেন। তাই আমার পরামর্শ এ মুহূর্তে আতঙ্কিত না হয়ে অপেক্ষা করুন, দেখুন।
Dr Tonmoy Choudhury, Lecturer, School of Business and Law, Edith Cowan University
Dr Tonmoy CHOUDHURY Lecturer, School of Business and Law, Edith Cowan University Source: Dr Tonmoy Choudhury
বাংলাদেশিসহ অস্ট্রেলিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আছেন, তাদের কী করা উচিত?

বাংলাদেশিসহ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অনেকেই পড়াশোনা শেষে অভিবাসন পেতে চেষ্টা করে এবং দিনশেষে তারা এখানেই রয়েই যায়। এখানে অনেককে সুযোগ দেয়া হয়েছে যারা কাজ করছেন তাদের সুপার একাউন্ট থেকে অর্থ তুলে ফেলার, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কাছে আমার উপদেশ আপনারা সেটা করবেন না।  আজকে আপনার কাছে যে এক হাজার ডলার আছে, তা ৩০ বছরে দুই বা তিন লাখ ডলার হয়ে যাবে। আমার উপদেশ যেভাবে আপনার সুপার একাউন্ট-এ অর্থ জমা হচ্ছে সেটা সেভাবেই থাকুক, সময়ের সাথে সাথে দেখবেন আপনার বিনিয়োগের পরিমান আরো বেড়ে গেছে।  এখন মার্কেটের যা উত্থান পতন তা এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক, কিন্তু এটা সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে।  

সাধারণভাবে মহামারী শেষ হয়ে গেলে সুপার অ্যাকাউন্টধারীর পক্ষে সেরা বিনিয়োগের নীতিটি কী হবে বলে আপনি মনে করেন?

মহামারী শেষ হয়ে গেলে আমরা 'নিউ নরমাল'-এ প্রবেশ করব, ২০০৮-৯ সালে অর্থনৈতিক মন্দার পর বিশ্ব তাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছিল। এই মুহূর্তে বিশ্বের বড়ো বড়ো দেশগুলো বলছে মহামারীর পর তাদের সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টকে বহুমুখী করবে, তো এখানে সুপার একাউন্ট-এ যারা বিনিয়োগ করে তাদের তিনটি পছন্দের সুযোগ থাকে লো রিস্ক, মিডল রিস্ক এবং হাই রিস্ক। তো বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী মিডল বা লো রিস্ক নিয়ে থাকে, কিন্তু আমরা দেখছি মানুষ প্রতিনিয়ত শেয়ার মার্কেটের খবর শুনে প্রায় প্রতিদিনই তাদের বিনিয়োগ পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে, যা খুবই খারাপ ব্যাপার। কিন্তু আমার বিশ্বাস একবার যখন মহামারী শেষ হয়ে যাবে মার্কেট তখন আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।  তাদেরকে যেটা করতে হবে, আগে তারা যে নীতি ফলো করছিলো তাতেই আবার ফিরে যাওয়া, এটাই হবে উত্তম।   

আপনি বর্তমানে কভিডের সময় ‘সেইফ এসেট’ বিষয়ে একটি প্রজেক্টে কাজ করছেন, বিষয়টি কি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করবেন? 

এই প্রজেক্টে আমি এবং জার্মানীর কিছু গবেষক কাজ করছি, আমরা যেটা দেখতে চাচ্ছি এই কভিড ১৯ মহামারী, এটা অবশ্যই একটি মেগা ক্রাইসিস, এর আগে যে অর্থনৈতিক মন্দা ছিল, এই দুই ক্রাইসিস-এর ভেতরে কোন এসেটগুলোতে বিনিয়োগ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম।  বিভিন্ন গবেষণা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি ইউএস এবং ইউরোপিয়ান সরকারগুলোর বন্ড, কয়লা এবং জ্বালানি তেল, এগুলোই বিনিয়োগের জন্য সেইফ এসেট হিসেবে রয়ে গেছে এতো ক্রাইসিস-এর মধ্যেও। আগে যা সেইফ ছিল এখনো তাই আছে।  অনেকেই দেখা যাচ্ছে যে হেলথ সেক্টরে বা ফারমাসিউটিক্যাল সেক্টরে এই মহামারীর সময়ে চাহিদার কারণে বিনিয়োগ করছেন, কিন্তু মনে রাখতে এগুলো সব সাময়িক। যখন মহামারী শেষ হয়ে বিনিয়োগ চিত্রটি আবার আগের ধারায় ফিরে আসবে।   

ডঃ তন্ময় চৌধুরী, এসবিএস বাংলাকে সময় দেয়ার আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 

ধন্যবাদ আপনাকেও 

পুরো সাক্ষাতকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন 

আরও দেখুনঃ

Share