“জোশ ফ্রাইডেনবার্গ রাজস্ব নীতি দিয়ে অর্থনীতিকে সচল করতে চাচ্ছেন”

Treasurer Josh Frydenberg delivers Budget 2019 to parliament.

Treasurer Josh Frydenberg delivers Budget 2019 to parliament. Source: AAP

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

অস্ট্রেলিয়ার ২০১৯-২০ অর্থ-বছরের ফেডারাল বাজেট নিয়ে কথা বলেছেন ওলঙগঙ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ অ্যাকাউন্টিং, ইকনোমিক্স অ্যান্ড ফাইনান্সের সিনিয়র লেকচারার খোরশেদ চৌধুরী।


গত মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার ফেডারাল বাজেট ঘোষিত হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ-বছরের এই নির্বাচনী বাজেটে ৭.১ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করা হয়েছে। এই উদ্বৃত্ত অর্থ আগামী চার বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

এসবিএস বাংলার সঙ্গে আলাপকালে ওলঙগঙ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ অ্যাকাউন্টিং, ইকনোমিক্স অ্যান্ড ফাইনান্সের সিনিয়র লেকচারার খোরশেদ চৌধুরী বলেন, গত কয়েক বছরের ঘাটতি থেকে এই উত্তরণের কারণ হচ্ছে, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের দাম এখন অনেক বেশি। এ ছাড়া, আয়কর খাত থেকেও অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া গেছে।

তার মতে, “বাজেট শক্তিশালী করার জন্য এবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একদিকে করের বোঝা কমানো, অন্যদিকে অবকাঠামোর ব্যয় বৃদ্ধি করা।”

আগামী ১০ বছরে অবকাঠামোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ দেখানো হয়েছে। খোরশেদ চৌধুরী বলেন, “এগুলো সাহসী উদ্যোগ।”
Australian Federal Budget 2019
Source: AAP
এই বাজেটে শ্রমজীবি ও কর্মজীবি মানুষের জন্য কর হ্রাস করা হয়েছে। যে-সব করদাতার আয় ১২৬ হাজার ডলারের নিচে তারা এত্থেকে উপকৃত হবেন। সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন তারা যাদের আয় ৪৮-৯০ হাজার পর্যন্ত। এগুলো চালু হবে জুলাই মাসের এক তারিখ থেকে, যদি এই সরকার আবারও ক্ষমতায় আসতে পারে।

ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ট্যাক্স রেট কমানো হয়েছে। ২৭.৫ শতাংশ থেকে এ বাজেটে ২৬ শতাংশ এবং ২০২১ সাল থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।

তাদের অ্যাসেট রাইটও ২৫ হাজার থেকে আগামী বছরে ৩০ হাজার ডলার করা হবে বলা হয়েছে।

খোরশেদ চৌধুরী বলেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারীরাও এই বাজেটে উপকৃত হবেন। চাষীদের জন্য ৬.৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ আছে। ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ডের জন্যও বরাদ্দ আছে। কুইন্সল্যান্ডে বন্যার জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ-বিল সহায়তা এবং অন্যান্য সহায়তার জন্য কিছু ভর্তুকি আসছে। ১২৫ ডলার পাবে পরিবারের জন্য এবং সিঙ্গেলদের জন্য ৭৫ ডলার।

স্বাস্থ্য খাতে আগামী ৭ বছরে ৭১ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে। আল্ট্রা-স্ক্যানসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষার খরচ কমানো হবে।

খোরশেদ চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য বৃত্তি ঘোষণা করা হয়েছে। স্কিল-প্যাকেজ হিসেবে ৫২৫ মিলিয়ন ডলার ভোকেশনাল ট্রেইনিংয়ের জন্য খরচ করা হবে।

যারা চাকুরি খুঁজছে তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য নতুন ৮০ হাজার এপ্রেন্টিসশিপ চালু করা হবে। যারা এপ্রেন্টিস গ্রহণ করবেন তাদের জন্য ৮ হাজার ডলার এবং যারা এপ্রেন্টিস হবেন, তাদের জন্য ২ হাজার ডলার করে দেওয়া হবে।

বয়স্করা যারা ৬৫ এবং ৬৬ বছর উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হবে সুপার ফান্ডে নতুন করে টাকা জমা করার। আগে সেটা সম্ভব ছিল না। কাজ না করলেও তারা সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ডে টাকা জমা করতে পারবেন।

বয়স্কদের স্বাস্থ্য খাতে আরও ৩৮ মিলিয়ন ডলার ৫ বছরে খরচ করা হবে।

এই বাজেটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কারা? খোরশেদ চৌধুরী বলেন, যারা প্রথমবারের মতো বাড়ি কিনতে যাচ্ছেন তাদের জন্য কোনো নতুন প্রণোদনা আসছে না। এখন আবাসন খাতটা খুব নাজুক ও খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
Khorshed Chowdhury
Khorshed Chowdhury, Senior Lecturer, Economics, School of Accounting, Economics & Finance, Faculty of Business, University of Wollongong. Source: Supplied
এ ছাড়া, ন্যাশনাল ডিজেবিলিটি ইনস্যুরেন্স স্কিমে কিছুটা ফান্ডের কমতি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

খোরশেদ চৌধুরীর মতে, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই বাজেটে “ভোট চাওয়া হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য।”

আর, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, তিনি বলেন, “আমি ঘন কাল মেঘ দেখতে পাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “গত ২৮ মাস থেকে মূদ্রা নীতি স্থবির হয়ে আছে।”

“জোশ ফ্রাইডেনবার্গ রাজস্ব নীতি দিয়ে অর্থনীতিকে সচল করতে চাচ্ছেন।”

খোরশেদ চৌধুরীর সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share