অস্ট্রেলিয়ায় বিবাহ-বিচ্ছেদের নিয়ম কী?

حقله های ازدواج

Source: Getty Images

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফ্যামিলি স্টাডিজ এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তারাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে থাকে। এই তালিকায় এর পরের স্থানে রয়েছে চল্লিশোর্ধ্ব দম্পতিরা, যাদের বয়স পঞ্চাশের প্রায় কাছাকাছি। আরও দেখা গেছে, যারা বিবাহ-বিচ্ছেদ করেন তারা সাধারণত ৯ বছর বা তারও কম সময় বিবাহিত-জীবন কাটানোর পর তা করেন।


বিবাহ-বিচ্ছেদ একটি সোজা-সাপ্টা প্রক্রিয়া। ফ্যামিলি ল আর্লি ইন্টারভেনশন ইউনিট এবং লিগ্যাল এইড নিউ সাউথ ওয়েলসের রিফিউজি সার্ভিসের একজন সলিসিটর ফ্লোরেন্স ক্রুজ মন্টালভো এর মতে, প্রয়োজনীয় যাবতীয় শর্ত পূরণ করা হলে মাত্র তিন মাসের মধ্যে এটি সম্পাদন করা যায়।

অস্ট্রেলিয়ান আইন অনুসারে, বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য বিবাহিত দম্পতিকে শারীরিকভাবে/বাহ্যিকভাবে অন্তত ১২ মাস আলাদা থাকতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য অপর পক্ষের সম্মতির প্রয়োজন হয় না। তবে, অপর পক্ষকে বিবাহ-বিচ্ছেদ আবেদনপত্রের অনুলিপি প্রদান করতে হয়।
 
নতুন স্থায়ী অভিবাসী এবং কতিপয় অস্থায়ী ভিসাধারী এবং শরণার্থী ভিসাধারীরা ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স থেকে বিনামূল্যে ট্রানস্লেশন সেবা পাওয়ার উপযুক্ত।
 
এই সেবা পাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় নবাগতদের ভিসা অনুমোদন হওয়ার দুই বছরের মধ্যে তাদের বিয়ের সনদসহ অন্যান্য আইনী কাগজ-পত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করার পরামর্শ দেন ফ্লোরেন্স ক্রুজ মন্টালভো।
 
যে-সব দম্পতি শারীরিকভাবে ১২ মাসের বেশি সময় আলাদা বসবাস করেছেন তারা ফেডারাল সার্কিট কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে পারেন।
 
আপনার বিয়ে যদি বিদেশে সম্পাদিত হয়, সেক্ষেত্রেও অস্ট্রেলিয়ায় ফ্যামিলি কোর্ট বিবাহ-বিচ্ছেদ অনুমোদন করতে পারে। যারা অস্থায়ী ভিসায় এদেশে রয়েছেন বিবাহ-বিচ্ছেদ হলে তাদের ভিসায় এর প্রভাব পড়তে পারে।
 
এ সম্পর্কে ক্রুজ মনটালভো বলেন, একজন ইমিগ্রেশন ল’ইয়ারের কাছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনী পরামর্শের জন্য যেতে হবে এবং দেখতে হবে যে, আবেদনকারীর জন্য বিকল্প কী কী উপায় রয়েছে।
 
বিবাহ-বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর বিবাহিত দম্পতি ১২ মাস সময় পায় তাদের সহায়-সম্পত্তি ভাগাভাগি করার জন্য।
 
ফাইনাল সেটেলমেন্টে উভয় পক্ষকে সহায়-সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করে দেওয়াটা জরুরি নয়। কোর্ট এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিটি কেস এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা আলাদাভাবে বিচার করে কোর্ট।
 
অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফ্যামিলি স্টাডিজের কাছ থেকে প্রাপ্ত সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে দেখা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় যতোগুলো বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় সেগুলোর প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রেই ১৮ বছরের কম-বয়সী সন্তানেরা সংশ্লিষ্ট থাকে।
 
অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ শিশু চাইল্ড সাপোর্ট স্কিম এর আওতাভুক্ত। শিশুর একজন প্যারেন্ট থেকে কতোটা চাইল্ড-সাপোর্ট অপর প্যারেন্টকে দিতে হবে তা হিসেব করে দেখে এই স্কিমটি।
 
যে-সব দম্পতি এক্ষেত্রে সমঝোতায় পৌঁছুতে পারে না, তারা চাইলে ডিপার্টমেন্ট অফ সোশাল সার্ভিসেস-এর সাহায্য নিতে পারে।
 
ফেডারাল সার্কিট কোর্ট অফ অস্ট্রেলিয়াতে বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন ফিজ হলো ৯১০ ডলার। তবে, বিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কারও কারও জন্য এই ফিজ কমানো হতে পারে।
 
এমা স্মলউড বলেন, সাংসারিক খরচ সম্পর্কে অবহিত থাকা দরকার। তাহলে বাচ্চাদের মঙ্গলের জন্য ভাল দর কষাকষি করা যাবে।
 
আপনি যদি বিবাহ-বিচ্ছেদ করতে চান, আপনি যে স্টেট বা টেরিটোরিতে বসবাস করেন, সেখানে কীভাবে বিনামূল্যে আইনী পরামর্শ পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানতে ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
 
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Follow SBS Bangla on .







Share