"দেশে ফিরে যাও” নির্দেশনায় অস্থায়ী ভিসাধারীরা হতাশ

Acting Federal Minister for Immigration Alan Tudge

Acting Federal Minister for Immigration Alan Tudge. Source: AAP

অস্ট্রেলিয়ার অস্থায়ী ভিসাধারীরা বলেন, ফেডারাল সরকারের আচরণে তারা হতাশ হয়েছেন। সম্প্রতি ফেডারাল সরকার বলেছে, অস্থায়ী ভিসাধারীরা যদি নিজেদের দেখাশোনা করতে না পারে, তাহলে তাদেরকে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারের লিংকটিতে ক্লিক করুন।


করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীতে অস্ট্রেলিয়ার অস্থায়ী ভিসাধারীরা টিকে থাকার সংগ্রাম করছেন। অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ-এর নির্দেশনা শুনে তারা এখন হতাশা অনুভব করছেন।

স্বল্প-মেয়াদী ভিসাধারীরা সরকারের ওয়েলফেয়ার সুবিধাদি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হন না। এসব সুবিধাদি সাধারণত অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য সহজলভ্য। অস্থায়ী ভিসাধারীদের জন্য তাই সরকার কিছু সাময়িক পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।
হেলথ, এজড কেয়ার, ডিজেবিলিটি কেয়ার, এগ্রিকালচার এবং ফুড প্রসেসিংয়ের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে অভিবাসী কর্মীদের জন্য ভিসার শর্তাবলী শিথিল করা হয়েছে।

যাদের কাজের অনুমতি ও অধিকার রয়েছে, তারা সুপার অ্যানুয়েশন থেকে ১০,০০০ ডলার উত্তোলন করতে পারবেন।
এসব পরিবর্তনের সমালোচনা করা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, যাদের নিজেদের খরচ মেটানোর কোনো সুযোগ নেই, সে রকম সুবিধা-বঞ্চিত ব্যক্তিরা কী করবেন? তারা তো বিপাকে পড়ে গেছেন।

সহায়তা আরও বৃদ্ধির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দি মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স সেন্টার। তারা বলছে, স্বল্প-মেয়াদী ভিসাধারীদের জন্য কোনো সোশাল সেফটি নেট বা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
বহু কর্মীর দেশে ফেরার জন্য প্লেনের টিকিট কেনার মতো পর্যাপ্ত সঞ্চয় নেই। আর, সুপার অ্যানুয়েশন এবং হেলথকেয়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাদের খুব সীমিত সুযোগ রয়েছে।

ডাইরেক্টর ম্যাট কাঙ্কেল (Matt Kunkel) বলেন, বেতন-ভর্তুকি এবং ওয়েলফেয়ার পেমেন্ট থেকে বাইরে রেখে মরিসন সরকার অস্ট্রেলিয়ার অস্থায়ী ভিসাধারীদেরকে পরিত্যাগ করছে।

অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস এর ওলেনা নুয়েন (Olena Nguyen) একজন অস্থায়ী অভিবাসী। তিনিও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শিকার।
গত দু’বছর ধরে তিনি হসপিটালিটি খাতে কাজ করছেন। সম্প্রতি একটি রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে কাজ থেকে সাময়িকভাবে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও বহু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর কাজ চলে গেছে। তাদের ক্লাস, প্লেসমেন্ট এবং ইন্টার্নশিপও বন্ধ হয়ে গেছে।
তাদের জন্য আরও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বড় অঙ্কের টিউশন ফিজ। এছাড়া, কোর্সগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত হওয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা কন্ডিশন্স ভঙ্গ করার ঝুঁকি তো রয়েছেই।

মিজ নুয়েন (Nguyen) বলেন, এই সঙ্কটের সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উপরে। তারা মানসিক-স্বাস্থ্য সঙ্কটেও ভুগছে।

ইতোমধ্যে বহু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে এবং সীমান্তগুলোতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যারা এখন নিজের দেশে ফিরতে চাচ্ছেন তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে গেছে।

সিডনির মাইগ্রেশন এজেন্ট মিগুয়েল মুডবিরি (Miguel Mudbidri) এশিয়া এবং সাউথ আমেরিকার গ্রাহকদের নিয়ে কাজ করেন। তিনি বলেন, কীভাবে তারা ঘরে ফিরবে তা নিয়ে বহু গ্রাহক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বিদেশে অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার বাইরে অবস্থানরত নিজ পরিবারের কাছ থেকেও আর্থিক সাহায্য গ্রহণ করতে পারছে না বহু স্বল্প-মেয়াদী ভিসাধারী। কারণ, বিদেশে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যরাও তাদের কাজ হারিয়েছেন এবং লকডাউন হয়ে আছেন।

মিস্টার মুদবিরি (Mudbidri) বলেন, সরকারের কাছ থেকে হ্যান্ড-আউট অর্থাৎ, আর্থিক কিংবা অন্য সাহায্য প্রত্যাশা করছেন না অস্থায়ী ভিসাধারীরা।
বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। যেমন, ভিসার শর্তসমূহ শিথিল করা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচও কমাতে পারে, বলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক শিক্ষা খাতের উপর সম্ভাব্য দীর্ঘ-মেয়াদী অভিঘাত সম্পর্কেও সতর্ক করেন মিস্টার মুদবিরি (Mudbidri)। এই খাতটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি খাত।

আপনার ভাষায় করোনাভাইরাসের আপডেট পেতে sbs.com.au/coronavirus ভিজিট করুন।


Share