একজন বাংলাভাষী স্বাস্থ্যকর্মীর দৃষ্টিতে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সংকটপূর্ণ সময় যেভাবে পার করছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যকর্মীরা

A healthcare worker at Cabrini private hospital in Melbourne, Tuesday, March 31, 2020

A healthcare worker at Cabrini private hospital in Melbourne, Tuesday, March 31, 2020 Source: AAP

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এখন একটা কঠিন সময়। অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যকর্মীরাও তার ব্যতিক্রম নন। অস্ট্রেলিয়ায় ডাক্তার-নার্স-জনস্বাস্থ্য পেশায় কাজ করছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী। করোনা প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা কি? এ বিষয়ে এসবিএস বাংলার সাথে কথা বলেছেন রয়েল মেলবোর্ন হসপিটালে রেজিস্টার্ড নার্স হিসেবে কর্মরত মিসেস শিখা মন্ডল।


করোনা প্রাদুর্ভাবের এই সময়টা আপনাদের জন্য বেশ সংকটপূর্ণ এবং এই সময়টায় আপনারা হসপিটালে কাজ করছেন, বর্তমান পরিস্থিতি আপনাদের কাজের প্রক্রিয়াকে কিভাবে প্রভাবিত করছে ?

-একজন হেলথ প্রফেশনাল হিসেবে আমাদেরকে ফ্রন্টলাইনে থাকতে হচ্ছে। এই প্রথম আমরা এতো বড় একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি, এরকম অবস্থায় আমি কখনো পড়িনি। আমরা সবসময়েই উদ্বিগ্ন যে কি হচ্ছে বা কি হতে যাচ্ছে। তবে আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবসময়েই আমাদের মানসিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।

আপনি কি সরাসরি COVID 19 রোগীদের সেবা দিচ্ছেন ?

-এই মুহূর্তে আমি কোন COVID 19 রোগীকে এটেন্ড করছি না। আমি নিউরো সার্জারি ডিপার্টমেন্টে কাজ করছি।  রয়েল মেলবোর্ন হসপিটালে COVID 19 রোগীদের জন্য ভিন্ন স্থান আছে, যা ইনফেক্টসাস ডিজিজ কন্ট্রোল নামে পরিচিত। তবে যখন এই বিভাগের রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন তাদের আমরা সেবা দেব। তবে এই মুহূর্তে অল্পসংখ্যক কিছু COVID 19 রোগী ভর্তি আছে যাদের অনেকেই সাধারণ সেবা নিয়ে চলে যাচ্ছে কিংবা আইসোলেশনে থাকছে।
Australian Bangladeshi Healthcare staff
Australian Bangladeshi Nurse Mrs Shikha Mondol Source: Supplied
সংক্রমণ এড়াতে আপনাদের কি কি ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে ?

-আমাদের হসপিটালে COVID 19-এর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই হাসপাতাল অথরিটি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন সংক্রমন কিভাবে কমানো যায়, স্ক্রীনিং, ভিজিটিং আওয়ার রেস্ট্রিকশন, ফেস টু ফেস কন্সালটেশনের পরিবর্তে ভিডিও বা টেলিফোন কল ইত্যাদি। আমাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে যখন COVID 19 রোগী অনেক হয়ে যায় তখন আমরা সেটা কিভাবে মোকাবেলা করবো। এছাড়া পাশাপাশি রিক্রুটিং ক্যাম্পেইন, তহবিল সংগ্রহ এবং হেলথ কেয়ার ওয়ার্কারদের জন্য জরুরি তহবিল ইত্যাদি কর্মসূচিও অব্যাহত আছে। রোগীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অবস্থা ভেদে স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করা হয়, যাদের শুধু পজিটিভ কিন্তু মাইল্ড সিনড্রোম যেমন, জ্বর, কাশি বা গলাব্যথা তাদের এটেন্ড করতে পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার,  সোশ্যাল ডিসটেন্স এগুলো মেইনটেইন করা হয়। যাদের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্রনিক সমস্যা আছে তাদের বেলায়  আরো উচ্চমানের চিকিৎসা দেয়া হয়।   

আপনি এবং আপনার যারা সহকর্মী আছেন এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের মানসিক অবস্থা কি রকম?

- আমাদের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও ওপর পর্যায় থেকে সবসময়েই মানসিক সহায়তা দেয়া হয়, আমাদের পিয়ার সাপোর্ট গ্রূপ আছে, কেউ কাজ করতে শংকিত বোধ করলে তারা কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে।

আপনার পরিবারের সাথে মেলামেশায় আপনাকে কি কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে?

- পরিবারে হাইজিন মেইনটেইন করা, অন্তত ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাপড় ধোয়াসহ সাধারণ সতর্কতাই অবলম্বন করে থাকি 

এসবিএস বাংলার শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান?

- অস্ট্রেলিয়ান হেলথ অথরিটি এই ভাইরাস মোকাবেলায় যা করার প্রয়োজন তারা তাই করছে, শ্রোতাদের এতটুকু আশ্বস্ত করতে পারি যে এটা নিয়ে এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমাদের মনোবল থাকতে হবে, এটা রোধ করতে যেসব ব্যবস্থা নেয়ার কথা সরকার নাগরিকদের নিতে বলেছে তা মেনে চললেই আমরা এর থেকে পরিত্রান পেতে পারি।  এজন্য সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। 

পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন
আরো পড়ুন:

Share