ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ বা ব্যবসায়িক উদ্যোগ সম্পর্কে আপনার যা জানা থাকা প্রয়োজন

A stock image of a Samsung Android tablet computer

Australia's digital economy has surged in value to $79 billion, a new report estimates. (AAP) Source: SBS Network

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সাথে সাথে ব্যবসার উদ্যোগ, পরিকল্পনা এবং তা সঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার পদ্ধতিরও বিকাশ ঘটছে। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের বিস্তারের ফলে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা উদ্যোগ যা ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ নামে পরিচিত তারও বিকাশ ঘটছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ প্রশিক্ষক এবং লেখক হেমি হোসেইনের 'ফায়ার ইয়োর বস' বইটি সম্প্রতি আমাজনের বেস্ট সেলার লিস্টে এক নম্বরে এসেছে। হেমি হোসেইন এসবিএস বাংলাকে জানিয়েছেন ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ নিয়ে তার ভাবনার কথা।


গত দশ বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে, ধীরে ধীরে আমরা ডিজিটালাইজেশনের দিকে যাচ্ছি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাধারণ শ্রম বাজার দখল করছে,  যার কাছে যত বেশি ডাটা আছে সে তত বেশি সমৃদ্ধ, রোবোটিক্স এখন বাজার নিয়ে যাচ্ছে। এই যে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিস্তার তাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনট্রেপ্রেনারশিপ বা ব্যবসায়িক উদ্যোগ।

ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ প্রশিক্ষক এবং লেখক হেমি হোসেইন বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, " বেশির ভাগ কাজই আমরা অনলাইনে করি, ক্রয়-বিক্রয়, প্রশিক্ষণ, এমনকি গান শোনা ইত্যাদি সবই অনলাইনে হচ্ছে - এখন এই অনলাইন প্লাটফর্মটাকে ব্যবহার না করে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা সম্ভব নয়। এই অনলাইন সিস্টেমকে ব্যবহার করে যে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ তাকেই আমরা বলছি ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ।" 
Bangladeshi Community
হেমি হোসেইনের 'ফায়ার ইয়োর বস' বইটি সম্প্রতি আমাজনের বেস্ট সেলার লিস্টে এক নম্বরে এসেছে Source: Supplied
প্রভাবশালী সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংকড-ইন, ইউটিউব, টিক-টকের পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস আমাজন, ই-বে'সহ অসংখ্য প্লাটফর্ম এখন ডিজিটাল দুনিয়া শাসন করছে। 

মিঃ হোসেইন বলেন, "এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে যে কেউ, যে কোন স্থান থেকে, যে কোন বয়সে ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনার হতে পারেন।"

হেমি হোসেইন গত বিশ বছর যাবৎ অস্ট্রেলিয়ায় বাস করছেন। টেলস্ট্রার সাবেক তথ্য প্রযুক্তিকর্মী মিঃ হোসেইন লক্ষ্য করলেন যে ২০১৪-১৫ সালের দিকে টেলস্ট্রা তাদের ট্র্যাডিশনাল আইটি সিস্টেমটি ডিজিটালে রূপান্তর করছে। তখন তিনি বুঝতে পারলেন বিশ্ব এখন ডিজিটালের দিকে যাচ্ছে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি শুরু করলেন  তার 'অনট্রেপ্রেনারশিপ জার্নি'।

নিজের ব্যবসার পাশাপাশি ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন মিঃ হোসেইন।  তার লেখা 'ফায়ার ইয়োর বস' বইটি সম্প্রতি আমাজনের বেস্ট সেলার লিস্টে এক নম্বরে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বইটিতে আমি আমার ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ যাত্রা শুরু থেকে  অনট্রেপ্রেনার হিসেবে সাফল্যের বেশ কয়েকটি স্টেপ আমি তুলে ধরেছি। বইটি আমি দুবছর আগে থেকে লেখা শুরু করি, এতে আমার উদ্যোক্তা হিসেবে ডেডিকেশন, শিক্ষা, সংগ্রাম যাই হয়েছে সব কিছুই স্টেপ বই স্টেপ লিখেছি, যাতে পাঠকরা যারা কাজ করতে চান তারা যেন উপকৃত হোন।" 

ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনার হতে গেলে যে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে সে সম্পর্কে মিঃ হোসেইন বলেন, "প্রথেমই প্রয়োজন প্রস্তুতি - যদিও অনট্রেপ্রেনারশিপ একটা সহজ স্কীল, কিন্তু একজন কেউ চাকরিতে ভালো করতে পারবে তার মানে এই নয় যে ব্যবসাতেও ভালো করবে। এজন্য প্রথমে জানতে হবে কিভাবে একটা ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরী করতে হয়,  সেইসাথে বিজনেস স্কীল এবং সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টিজের প্রয়োজন।"

"প্রথমত, বিজনেস স্কীলের জন্য দৃঢ়তা এবং জয় করার মানসিকতা থাকতে হবে।"

"দ্বিতীয়ত, মনেটাইজেশন প্রক্রিয়া ভালো করে জানা জরুরি। যখন কোন প্রোডাক্ট মার্কেটে আসবে, তখন গ্রাহকের কোন সমস্যাটি তারা সমাধান করতে চান,  তারা কেন প্রোডাক্টটা কিনবে, অথবা বাজারে ইউনিক প্রপোজিশন ভ্যালুটি কি হবে, এ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি।"

"তৃতীয়ত, ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে; কারণ মার্কেটিংই হচ্ছে ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ভালো করে ব্যবহার করার প্রক্রিয়া জানতে হবে।" 

এছাড়া ওয়েবসাইট ভালো করে ব্যবহার করতে পারার দক্ষতা, যেমন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও, গুগল এডওয়ার্ডসে মার্কেটিং, ফেসবুকের ব্যবহার, কনটেন্ট লেখা ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসার লিড নিয়ে আসতে পারার কৌশলগুলো জানা থাকা জরুরি।

হেমি হোসেইন 'ডিজিটাল অনট্রেপ্রেনারশিপ জার্নি' শুরু করতে অন্তত ছয় মাস প্রস্তুতির এবং সেইসাথে একজন মেন্টরের অধীনে কাজ করার পরামর্শ দেন।

মিঃ হোসেইন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা অটোমেশনের কারণে অনেক চাকরি হারিয়ে যাবে এটা স্বীকার করে বলেন, এক সমীক্ষায় তিনি দেখেছেন যে ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৭০ ভাগ চাকরি বিলীন হয়ে যাবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকলে হলে অটোমেশনের কোন বিকল্প নাই। কিন্তু এর থেকে পরিত্রানের উপায় হচ্ছে মার্কেটে যে সব স্কিলের প্রয়োজন মানব সম্পদকে সেইভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আগামী ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত করে তোলা।

পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের লিংকে ক্লিক করুন
আরো পড়ুন:



Share