A Bangladeshi woman found dead in Minto

A Bangladeshi woman's dead body was found in the garage at Carruthers Street in Minto, in the Western Suburb of Sydney. She was identified as Syeda Nirupoma, mother of two children. Victim's relatives described it as a case of domestic violence. Husband of the deceased woman is in police custody. At the crime scene, two children aged 10 and 6 were found asleep and taken into police custody.

Syeda Nirupoma

Source: SBS Bangla

Police in front of the deceased house
Source: SBS Bangla
গত শনিবার রাতে সিডনির পশ্চিমাঞ্চলের সাবার্ব মিন্টোর এক বাড়ির গ্যারেজ থেকে সৈয়দা নিরূপমা নামের ৩৩ বছর বয়েসী এক বাংলাদেশি নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত ব্যক্তির টেলিফোন কল পেয়ে ভোর চারটার দিকে পুলিশ Carruthers street মিন্টোর ওই বাড়িতে গিয়ে গ্যারেজ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ এই ঘটনায় নিহত নারীর স্বামী আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানায় নি ক্যাম্পবেলটাউনের পুলিশ।

পুলিশ দিনভর পুরো এলাকাটিকে ঘিরে রাখে এবং জনগণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। গোয়েন্দা পুলিশ ও ফরেন্সিক বিভাগ যৌথ তদন্তের পর সকালের দিকে মৃত নারীর লাশ পুলিশ নিয়ে যায়। অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়, ময়না তদন্তের পর নিহত ব্যক্তির নিকট আত্মীয়দের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। তবে কবে নাগাদ তা করা হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায় নি। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করছে ক্যাম্পবেলটাউন পুলিশ ও State Crime Commands Homicide Squad.

নিহত সৈয়দা নিরূপমার দশ বছর বয়েসী একটি ছেলে এবং ছয় বছর বয়েসী একটি মেয়ে রয়েছে। পুলিশ ওই বাসা থেকে  ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু দুটিকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে গেছে। 

জানা যায়, আলতাফ হোসেন ২০০০ সালের দিকে একটি সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হিসেবে অস্ট্রেলিয়া আসেন এবং তার পর দেশে ফিরে না গিয়ে এখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন । ২০০৪ সালের দিকে বাংলাদেশে গিয়ে তিনি সৈয়দা নিরূপমাকে বিয়ে করেন। নিরুপমা ও আলতাফ গত সাত বছর ধরে মিন্টো এলাকার এই বাড়িতে বাস করতেন।

আলতাফ হোসেন TAFE এ কাজ করতেন। কর্মস্থলে ব্যথা পাওয়ার পর তার একটি অপারেশন হয় এবং এর পর গত দুই বছর ধরে তেমন কোনো কাজ করতেন না বলে প্রতিবেশীরা জানান। নিহত নিরূপমা ওই গ্যারাজে  মিষ্টি বানিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশি দোকানগুলোতে সরবরাহ করে স্বামীকে সাহায্য করতেন।

নিরূপমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম ওয়েলফেয়ার সেন্টারের জেনারেল সেক্রেটারি আনিসুল আফসার। তিনি বলেন:

“কাজি আলীর মাধ্যমে রিভার স্টোন কবরস্থানে কিংবা ক্যাম্পস ক্রিক কবরস্থানে আমরা বিনামূল্যে তার দাফনের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া, নারেলাম সিমেট্রিতেও তার বিনা খরচে দাফনের জন্য আমরা আলোচনা করছি।”

“তার দাফনের খবরাখবর আমরা জানাবো। এ জন্য কোনো টাকা-পয়সা অনুদানের প্রয়োজন নেই।”

“আমরা আদালতের পক্ষ থেকে শুনেছি, ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার স্বামী আলতাফ হোসেন এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তার দুই সন্তান, আলিফ হোসেইন (১০ বছর) এবং আকিতা হোসেইন (৬ বছর) এখন ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিটি সার্ভিসেস (DOCS) এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।”

“তার প্রতিবেশি শামসুল হুদা এবং তার স্ত্রী সাময়িকভাবে এই বাচ্চা দু’টির দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। আদালত এবং বাচ্চাদের বাবা শামসুল হুদার কাছে বাচ্চাদের পাঠাতে রাজি হয়েছেন।”
Shamsul Huda
Shamsul Huda Source: SBS Bangla
তাদের প্রতিবেশী শামসুল হুদা এসবিএস বাংলাকে বলেন:

“ওরা সবসময় আমাদের বাসায় যাওয়া-আসা করতো। আমাকে (নিরূপমা) বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করতো। আমি ওরে আপন বোনের মতো স্নেহ করতাম। ওরা আমাদের খুব ঘনিষ্ট ছিল।”

“ওদের মধ্যে এমন কিছু দেখি নাই যে, এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এটা খুবই মর্মান্তিক (ও) দুর্ভাগ্যজনক আমাদের জন্য।”

অভিযুক্ত স্বামী আলতাফ হোসেন সম্পর্কে তিনি বলেন:

“ও এ রকম ফেরোশাস কোনো ছেলে ছিল না। ও বেশ বোকাসোকা ছেলে ছিল। কারও সাথে (তাকে) ঝগড়া করতে আমি দেখি নাই বা শুনি নাই।”

নিহত নিরূপমার লাশ দাফন ও ছোট বাচ্চা দুটির দেখাশোনা সম্পর্কে প্রতিবেশী শামসুল হুদা বলেন:

“আমরা আমাদের মিন্টো কমিউনিটি থেকে লাশ দাফনের চেষ্টা করতেছি এবং আমরা বাচ্চাগুলিকে লুক আফটার করতে চাই।”
Abdullah Khan
Abdullah Khan Source: Supplied
নিরূপমার মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ খান বোটানিতে বসবাস করেন। মূলত তিনিই নিরূপমা ও আলতাফের বিয়ের ঘটকালি করেন। এসবিএস বাংলাকে তিনি বলেন, গত দু’বছর ধরে তিনি নিরূপমার সঙ্গে কথা বলতেন না। কারণ, নিরূপমা ও আলতাফের মধ্যে ঝগড়া ও মনোমালিন্য ঘটলে তিনি মিটমাট করার চেষ্টা করতেন। এক পর্যায়ে তিনি নিরূপমাকে পরামর্শ দেন পুলিশে রিপোর্ট করার জন্য। কিন্তু, নিরূপমা এ কথায় রাজি না হলে তিনি এ ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

আলতাফ ও নিরূপমার ঝগড়া সম্পর্কে আব্দুল্লাহ বলেন,

“নিরূপমা কাউকে বলতো না। পুলিশকেও রিপোর্ট করতো না।”
Afrina
Afrina Source: Supplied
আব্দুল্লাহ খানের স্ত্রী আফরিনা নিরূপমা সম্পর্কে এসবিএস বাংলাকে বলেন:

“ও তো খুবই ভাল একটা মেয়ে। খুবই লক্ষী, শান্তশিষ্ট।”

“ও সবসময়েই আমাদেরকে বলতো, ওর জামাই খুব মারধোর করে। কিন্তু, আমার জামাই আব্দুল্লাহ (তাকে) বলতো, তুমি পুলিশে রিপোর্ট করো। কিন্তু, সে কখনই পুলিশে রিপোর্ট করতে চাইতো না, ভয় পাইতো।”

নিরূপমার অকাল মৃত্যুতে তার মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ, ভাবি আফরিনাসহ অস্ট্রেলিয়ার বাংলাভাষী সম্প্রদায় শোকাভিভূত ও হতভম্ব।

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share
4 min read
Published 22 April 2019 1:44pm
Updated 4 May 2023 3:55pm
By Abu Arefin

Share this with family and friends