গত ছয় দশক ধরে বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র নিয়ে গবেষণা ও অনুবাদ করছেন এক অস্ট্রেলিয়ান

ডঃ জন হুড বাংলা সাহিত্য, চলচ্চিত্র এবং ইতিহাস নিয়ে মৌলিক গ্রন্থের পাশাপাশি বাংলা থেকে ইংরেজিতে সরাসরি অনুবাদ করেছেন এক ডজনেরও বেশি গ্রন্থ।

Dr. John Hood has been writing and researching on Bangla literature, films and history for the last six decades.

Dr. John Hood has been writing and researching on Bangla literature, films and history for the last six decades. Source: SBS Bangla

গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • ডঃ হুড নীহাররঞ্জন রায়ের বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থ ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ‘হিস্ট্রি অফ দ্য বেঙ্গলি পিপল’ নামে
  • অনেকটা আকস্মিক ভাবেই ভারততত্ত্ব বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হন তিনি
  • প্রয়াত লেখক হাসান আজিজুল হকের 'সাবিত্রী উপাখ্যান' অনুবাদ করেছেন

ডঃ জন হুড পড়াশোনা করেন মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে। ১৯৬৬ সাল থেকে ভারতের কলকাতায় যাতায়াত করছেন নিয়মিত। তবে কলকাতায় তিনি কোন আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা না করলেও ভারততত্ত্ব, বাংলা সাহিত্য, চলচ্চিত্র এবং ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন।

ডঃ হুড গবেষণা করেছেন বিখ্যাত লেখক নীহাররঞ্জন রায়ের সাহিত্যকর্ম নিয়ে। নীহাররঞ্জন রায়ের বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থ ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ‘হিস্ট্রি অফ দ্য বেঙ্গলি পিপল’ নামে।

এছাড়া তাঁর মৌলিক লেখা গ্রন্থগুলোর মধ্যে আছে চ্যাজিং দ্যা ট্রুথ, দ্যা ফিল্মস অফ মৃনাল সেন, দ্য এসেনশিয়াল মিস্ট্রি - মেজর ফিল্ম মেকার্স অফ ইন্ডিয়ান আর্ট সিনেমা, বিয়ন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড অফ অপু - দ্যা ফিল্মস অফ সত্যজিৎ রায়, দ্যা ব্লিডিং লোটাস-নোশন্স অফ নেশন অফ ইন বাংলাদেশি সিনেমা।

তাঁর অন্যান্য অনুবাদ গ্রন্থগুলোর উল্লেখযোগ্য লাভ এন্ড আদার ফর্মস অফ ডেথ-পোয়েমস অফ বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, স্টোরিজ অফ দ্যা পার্টিশন এন্ড বিয়ন্ড (শর্ট স্টোরিজ অফ প্রফুল্ল রায়)।

ডঃ হুড এসবিএস বাংলার সাথে এক আলাপচারিতায় তাঁর ভারতে পড়াশোনা-গবেষণা, থাকাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

জন হুড এসবিএস বাংলাকে জানান, অনেকটা আকস্মিক ভাবেই ভারততত্ত্ব বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। অথচ গান্ধী-নেহেরু ছাড়া আর কারো নাম, এমনকি ভারত সম্পর্কেও খুব বেশি কিছু জানতেন না।

বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র নিয়ে গবেষণা ও অনুবাদে যেভাবে জড়িয়ে পড়েন সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডঃ হুড বলেন,"ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে কলকাতা গিয়েই প্রথম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম জানতে পারি।"

এ সময় তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন শিবনারায়ণ রায় এবং অতীন্দ্র মজুমদারকে।

এক পর্যায়ে তিনি লেখক প্রফুল্ল রায়ের লেখার প্রতি আকৃষ্ট হন এবং অনুবাদ করেন তাঁর ছোট গল্পের গ্রন্থ।

প্রফুল্ল রায়ের লেখা সম্পর্কে তিনি বলেন, "তাঁর লেখায় দেশভাগ, সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর গল্প যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তা আমাকে দারুণভাবে আলোড়িত করেছে।"

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃনাল সেন, সত্যজিৎ রায় এবং বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের চলচ্চিত্র ও কবিতা নিয়েও তিনি লিখেছেন কিছু মৌলিক ও অনুবাদ গ্রন্থ।

সত্যজিৎ রায়ের উপর লিখতে প্রথমে তাঁকে উৎসাহিত করেন লেখক-চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, "প্রথমে সত্যজিৎ রায়ের উপর লিখতে আমার আত্মবিশ্বাসই ছিল না, অথচ তাকে নিয়ে লেখা বই বিক্রির জন্য দেয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই সব কপি শেষ হয়ে যায়। এটা আমি গর্ব করে বলছি না, শুধু বোঝাতে চেয়েছি যে তিনি কতটা জনপ্রিয়।"

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ভারতীয় ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বাংলাদেশে যান। সেসময় ঢাকার নিউ এলিফ্যান্ট রোডে তার সাথে তানভীর মোকাম্মেল, তারেক মাসুদ, মোরশেদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন চলচ্চত্র কর্মী ও নির্মাতাদের সাথে, পরিচয় ঘটে বাংলাদেশের সাহিত্য ও চলচ্চিত্র সংস্কৃতির সাথে।

তিনি প্রয়াত লেখক হাসান আজিজুল হকের 'সাবিত্রী উপাখ্যান' অনুবাদ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর অনুবাদের কাজটি ছিল খুবই কঠিন, এর ন্যারেটিভ প্যাটার্নটিও সহজ ছিল না।

খুব শীঘ্রই তার আরো কয়েকটি বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফোকাস অন বাংলাদেশ - ডকুমেন্টারী ফিল্মস অফ তানভীর মোকাম্মেল বইটি।

জন হুডের সাক্ষাৎকারগুলো ধারণ করা হয়েছে ইংরেজিতে, তাঁর সাক্ষাৎকারের সবগুলো পর্ব শুনতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন:

Follow SBS Bangla on .

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

আরও দেখুন:



Share
Published 1 April 2022 1:39pm
Updated 1 April 2022 3:11pm
By Shahan Alam


Share this with family and friends