অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর আঘাতে অস্ট্রেলিয়ানরা চাকুরি হারাবেন বলে সতর্ক করলো ফেডারাল সরকার

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর ভয়ানক বিরূপ প্রভাব পড়ছে অস্ট্রেলিয়ানদের উপর। আরও বেশি অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

ماتیاس کورمن وزیر دارایی استرالیا

Source: AAP

অর্থনীতির উপর ভয়ানক করোনাভাইরাসের বিরূপ প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে এবং অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের চাকুরি হারাবেন বলে সতর্ক করেছে ফেডারাল সরকার। অর্থনৈতিক ক্ষতি সামাল দেওয়ার জন্য তারা আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আগামী ছয় মাস লড়াই করার জন্য অস্ট্রেলিয়ানদেরকে প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে। অর্থনীতির উপরে এই বৈশ্বিক মহামারীর যে বিরূপ প্রভাব দেখা দিচ্ছে তা নিরসনে দ্বিতীয় দফায় প্রণোদনা প্রদানের বিষয়টি চূড়ান্ত করছে ন্যাশনাল কেবিনেট।

ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ এবং ফাইন্যান্স মিনিস্টার ম্যাথিয়াস কোরম্যানের সঙ্গে মঙ্গলবার এ নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।

সিনেটর ম্যাথিয়াস কোরম্যান বলেন, পরিস্থিতির ঘন ঘন পরিবর্তন হচ্ছে। এর ফলে এই স্বাস্থ্য-সঙ্কটে তারা রাজস্ব খরচ আনুপাতিক হারে কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

ক্যানবেরায় রিপোর্টারদেরকে তিনি বলেন,

“ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিঃসন্দেহে বন্ধ হবে এবং অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের চাকুরি হারাবেন।”

“এই চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে আমরা সচেতন, আমাদের সামনে যা আছে তা নিয়ে আমরা সচেতন।”

“সেজন্য আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করছি অস্ট্রেলিয়ানদেরকে এই সময় পার করার জন্য কীভাবে আমরা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাব।”
Minister for Finance Mathias Cormann.
Minister for Finance Mathias Cormann. Source: AAP
সিনেটর কোরম্যান বলেন, হসপিটালিটি, ট্যুরিজম এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খাতগুলোতে সবচেয়ে খারাপ অভিঘাত পড়বে।  তিনি বলেন,

“আমরা চাই যত বেশি সংখ্যক সম্ভব অস্ট্রেলিয়ান কর্মরত থাকুক।”

“এবং যারা কাজ হারাবেন, অর্থনীতির অন্যান্য খাতে, অন্যত্র কর্ম-সংস্থানের জন্য নিঃসন্দেহে তারা আগের চেয়ে ভাল করবেন।”

“কিন্তু, তার জন্যও একটি সীমা থাকবে। সেজন্য আমরা অনেক বেশি উদ্বিগ্ন যে, আমাদের ইনকাম সাপোর্ট সিস্টেমের মাধ্যমে তাদেরকে যথাযথ সহায়তা প্রদান করতে হবে আমাদের।”
ট্যুরিজম মিনিস্টার সাইমন বার্মিংহাম বলেন, প্রতি ১৩টি কাজের মধ্যে একটি ট্যুরিজম এবং হসপিটালিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। স্কাই নিউজকে তিনি বলেন,

“সেসব ব্যবসা এবং কাজের সবগুলোই এখন লাইনে আছে।”

কোভিড-১৯ ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে বিমান-ভ্রমণ অনেক কমে যাওয়ায় অর্থনীতির আরেকটি ক্ষেত্র অ্যাভিয়েশন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে ঘোষিত ১৭.৬ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজটির উদ্দীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলোকে এবং যারা কল্যাণ ভাতা গ্রহণ করে থাকেন তাদেরকে নগদ অর্থ প্রদান করার মাধ্যমে স্বস্তি দেওয়া।
আগামী সপ্তাহে যখন সংসদ অধীবেশন বসবে তখন আর্থিক সহায়তার এ দুটি প্যাকেজ পাশ করতে চায় সরকার।

এই প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে এবং করোনাভাইরাস-সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য মঙ্গলবার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবে ফেডারাল বাজেটের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা।

সিনেটর কোরম্যান বলেন, এই কঠিন সময় অতিবাহিত করার জন্য এবং এত্থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য জনগণকে সহায়তা করা দরকার। তিনি বলেন,

“আমরা চাই এই পুনরুদ্ধার যতোটা সম্ভব শক্তিশালী হওয়া সম্ভব তা হোক।”

এজড কেয়ার খাত, ইনডোর মিটিংস এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিউনিটিগুলোর মতো বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ন্যাশনাল কেবিনেট আলোচনা করবে।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ গত সপ্তাহে ১৭.৬ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

এর মাধ্যমে ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলোকে সহায়তা করা হবে এবং ওয়েলফেয়ার ভাতা-গ্রহীতাদেরকে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। তবে, সরকার অনুধাবন করছে যে, তারা যা আশঙ্কা করছে, অর্থনীতিতে তার চেয়েও গভীর অভিঘাত পড়বে।

কুইন্সল্যান্ড, ভিক্টোরিয়া, সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং এসিটি সরকার ইতোমধ্যে স্টেট অফ ইমার্জেন্সি বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এদিকে, যারা তাসমানিয়া যাবেন, তাদের সবাইকে প্যাসেঞ্জার অ্যারাইভাল কার্ড পূরণ করতে বাধ্য করবে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।

অস্ট্রেলিয়া জুড়ে ইতোমধ্যে ৩৬০ জনেরও বেশি লোক সুনিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এ পর্যন্ত পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

Share
Published 17 March 2020 1:18pm
Updated 18 March 2020 11:45am
By SBS News
Presented by Sikder Taher Ahmad
Source: SBS


Share this with family and friends