বাংলাদেশ বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে

1970 Bhola Cyclone

Aerial view of a village on the island of Bhola devastated by the tropical cyclone and tidal wave in East Pakistan (now Bangladesh). Source: Hulton Archive

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

অস্ট্রেলিয়ায় বুশফায়ারে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে সাহায্য করতে ত্রাণ-তহবিল সংগ্রহ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ডিজাস্টার রিলিফ কমিটি। এর প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালী ইসলাম বলেন, বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উত্তরবঙ্গ অনেকটা মরুময় হওয়ার পথে রয়েছে। সেখানে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।


১৯৯৮ সালে সিডনিতে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ডিজাস্টার রিলিফ কমিটি (BADRC) গঠিত হয়। প্রথমে কো-অর্ডিনেটর ছিলেন আব্দুল হালিম চৌধুরী আর সেক্রেটারি ছিলেন আফসার উদ্দিন আহমেদ।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালী ইসলাম এই সংগঠনটির সঙ্গে গত ১২-১৩ বছর ধরে যুক্ত আছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে গত আট বছর তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেছেন।

এই অলাভজনক সংগঠনটি অস্ট্রেলিয়ায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত বলে জানান, ড. ওয়ালী। এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন,

“বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা ত্রাণ বিতরণ করি এবং এজন্য তহবিল সংগ্রহ করে থাকি।”
Dr Wali Islam
Dr Wali Islam, President, Bangladesh Australia Relief Committee (BADRC). Source: SBS Bangla
তাদের কার্যক্রম বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বিস্তৃত। ড. ওয়ালী বলেন,

বাংলাদেশে “গত দুই বছরে বন্যার জন্য আমরা ত্রাণ দিয়েছি। ... যেটা আমরা রোহিঙ্গা রিফিউজি বলে থাকি, এটা ন্যাচারাল ডিজাস্টার না হলেও ন্যাচারাল ডিজাস্টারের মতোই অবস্থা হয়ে গেছে। সেখানে আমরা ত্রাণ-কার্য পরিচালনা করেছি।”

“আমরা শুধুমাত্র রোহিঙ্গা রিফিউজিদের জন্যই ২০ হাজার ডলার পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।”
আমাদের দেশ (বাংলাদেশ) বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে তারা নদী-ভাঙ্গন এলাকায় শিশুদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন। ড. ওয়ালী বলেন,

“আমরা নদী-ভাঙ্গন এলাকায় একটা স্কলারশিপ প্রতিষ্ঠা করেছি বাচ্চাদের জন্য। স্কুলগামী ছেলে-মেয়েদের জন্য সেখানে এটা আমরা অনেকদিন ধরে চালাচ্ছি।”

“যখন বাংলাদেশে বড় (ঘূর্ণিঝড়) সিডর হয়েছিল, তখন বাংলাদেশে একটি স্কুল-কাম-সাইক্লোন শেল্টার তৈরির জন্য আমরা সারা অস্ট্রেলিয়া ব্যাপী ফান্ড রেইজ করেছিলাম। ৫০ হাজারেরও বেশি ডলার আমরা উঠিয়েছিলাম। আমরা বাগেরহাট জেলার (রামপাল উপজেলার) কাকড়াবুনিয়া গ্রামে স্কুল তৈরি করেছি।”

অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে ড. ওয়ালী বলেন,

“অস্ট্রেলিয়ায় আমরা এর আগে বুশফায়ারের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করেছি, রিলিফ কাজে আমরা অংশ নিয়েছি, কুইন্সল্যান্ডে বন্যায় আমরা কাজ করেছি।”

“এবার বুশফায়ার উপলক্ষেও আমরা ত্রাণ-কার্য পরিচালনার জন্য ফান্ড রেইজ করছি।”

আগামী ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে সিডনির লাকেম্বায় তারা একটি সভার আহ্বান করেছেন। ড. ওয়ালী বলেন,

“আগামী রবিবার বিকাল পাঁচটায় লাকেম্বা লাইব্রেরিতে হল নম্বর ২-এ কমিউনিটিকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি আসার জন্য। আমরা একসাথে কীভাবে কাজ করতে পারি, যাতে করে আমরা বড় ধরনের একটা ‘Impact’ আনতে পারি এবারের বুশফায়ারের সহায়তার জন্য।”

সংগৃহীত অনুদান কীভাবে ব্যবহৃত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,

“আমরা চাচ্ছিলাম সরাসরি রুরাল ফায়ার সার্ভিসেস-এর সঙ্গে কাজ করতে। তারা এত বেশি ব্যস্ত যে, তারা বলেছে, আমরা ফান্ড নিতে পারি কিন্তু কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা মুশকিল।”

“তারপর আমরা বলে একটা গ্রুপ আছে বা চ্যারিটি অর্গানাইজেশন আছে; তাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়ে তুলি। ফান্ড উঠলে আমরা চেষ্টা করবো, একটা নমিনেটেড এলাকায় আমাদের ভলান্টিয়াররা গিয়ে সেখানে কাজ করতে, যদি এটা সম্ভব হয়। না হলে ভিনিসের সাথে পার্টনারশিপে আমরা কাজ করবো।”

তাদেরকে অনুদান দিলে ট্যাক্সের ক্ষেত্রে কোনো রেয়াত পাওয়া যাবে কিনা তা জানতে চাইলে ড. ওয়ালী বলেন,

“আমাদের নিজস্ব কোনো ট্যাক্স-একজেম্পশন নেই। সেজন্যই আমরা ভিনিসের সাথে পার্টনারশিপে এসেছি। ভেনিসের ট্যাক্স-ডিডাক্টিবিলিটি আছে, পারমিশন আছে। আমরা সেই পারমিশন ব্যবহার করবো। যে কেউ আমাদের কাছে রশীদ চাইতে পারে। আমরা ভেনিসের রশীদ দেব, তারা এখান থেকে ক্লেইম করতে পারবেন।”

অনুদান কীভাবে পাঠাতে হবে সে সম্পর্কে তিনি বলেন,

“আমরা একটা ফ্লায়ার তৈরি করেছি। সেখানে ব্যাংক-ডিটেইলস দেওয়া আছে।”

অনুদান সংগ্রহের জন্য উদ্দেশ্যে ফান্ড-রেইজিং ইভেন্ট, যেমন ডিনারের আয়োজন করার কথাও ভাবছেন তারা।

পরিশেষে ড. ওয়ালী ইসলাম বাংলাদেশ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,

“আমাদের দেশ (বাংলাদেশ) বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে।”

“উত্তরবঙ্গ অনেকটা মরুময় প্রসেসে আছে।” সেখানে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে এবং পানি থেকে ভারি ধাতু যেমন, আর্সেনিক, সীসা ইত্যাদি আসছে, বলেন তিনি।

ড. ওয়ালী ইসলামের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share