জমির লবনাক্ততা রোধ করে উর্বরতা বৃদ্ধির উপায় বের করেছেন ডঃ সাদিকুল আওয়াল

Bangladeshi community in Melbourne Bangladeshi Australian Salinity

A representational image of algae treatment research in laboratory Source: SBS Network Image

অস্ট্রেলিয়াতো বটেই, সারা বিশ্বে লবনাক্ততা বৃদ্ধির কারণে ভূমি ও মাটির উর্বরতা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর জন্যে মুলত মানুষের কর্মকান্ডই দায়ী। লবনাক্ততা মাটির নিজস্ব উর্বরতা চিরতরে শেষ করে ফেলেছে। মেলবোর্ণ পলিটেকনিকের স্কুল অফ ফুড, প্লান্ট এন্ড এনিম্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের অধ্যাপক ডঃ সাদিকুল আওয়াল লবনাক্ততা বৃদ্ধির কারণে জমির নিজস্ব উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার একটা সহজ সমাধান গবেষণা করে বের করেছেন। এসবিএস বাংলাকে ডঃ সাদিকুল আওয়াল জানিয়েছেন লবণাক্ততা বৃদ্ধির সমস্যা এবং সমাধান সম্পর্কে।


সারা বিশ্বে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে ডঃ সাদিকুল আওয়াল জানান, "সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা, অপরিকল্পিত চাষাবাদ, সেচব্যবস্থা, যথেচ্ছ কীটনাশক ব্যবহার, রাসায়নিক সার ব্যবহার, ভূমিক্ষয়, গাছ বন-জঙ্গল কাটা ইত্যাদি। এই কারণ গুলো কিছু প্রাকৃতিক, আর কিছু মানব সৃষ্ট। এই লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে ভূমির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। আর তা প্রভাব ফেলছে খাদ্য নিরাপত্তায়। "

তিনি বলে, বাংলাদেশে লবণাক্ততার কারণ ভিন্ন। এর পুরোটাই মানবসৃষ্ট বলে তিনি মনে করেন।

"উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫৩ ভাগ জমি লবণাক্ততায় আক্রান্ত। সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক হারে চিংড়ি চাষের ফলে জমি তার উর্বরতা হারাচ্ছে, একদম শেষ করে ফেলেছে, এসব জায়গায় গেলে কোন সবুজ চোখে পড়বে না। ধরা যাক কোন কারণে যদি এসব চিংড়ি চাষ বন্ধ হয়ে যায় তবে কৃষকরা এসব জমিতে ধান, পাট বা আবাদি শস্য উৎপাদন করতে পারবে না। এর কারণে বাংলাদেশ ছোট্ট দেশ হিসেবে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছে।"
Bangladeshi community in Melbourne Bangladeshi Australian Salinity
Dr Sadiqul Awal found a way to regain land fertility Source: Supplied
ড: সাদিক লবণাক্ততা রোধের উপায় বের করেছেন যা পরিচিত 'এলগাল টেকনোলজি' নামে, এসম্পর্কে তিনি বলেন, "আমরা যথেষ্ট ক্ষতি করে ফেলেছি, তাই আমাদের এই ক্ষতি কমিয়ে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে হবে। জমির উর্বরতা পুনরুদ্ধারে আমি গবেষণা করেছি এবং একটি সহজ উপায় বের করেছি। এই গবেষণায় আমি দেখিয়েছি উচ্চ লবনাক্ত জমির লবণাক্ততা শূন্যের কাছাকাছি আনা সম্ভব। এবং এর ফলে মাটি তার উর্বরতা ফিরে পাবে।এবং এই অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে এলগাল ট্রিটমেন্ট খুব কার্যকরী। এটা বেশ সহজ এবং ট্রাডিশনাল টেকনোলজি। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে না। " 

বাংলাদেশে এই পদ্ধতি কতটুকু কার্য্যকর, এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, " কোন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের মতো বাংলাদেশের জন্য এই টেকনোলজি সবচেয়ে বেশি কার্য্যকর। তারা মাঠ পর্যায়ে এর প্রয়োগ ঘটাতে পারে।" 

তিনি জানান, বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ের কিছু টিম যখন অস্ট্রেলিয়াতে এসেছিলো তখন এ বিষয়ে তিনি তাদের অবহিত করেন এবং তারা বেশ আগ্রহ এবং উৎসাহ দেখিয়েছেন। 

ডঃ সাদিক পেশাগত কাজ ছাড়াও লেখালেখি করে থাকেন। তার 'বহে সমান্তরাল' এবং 'প্রবাসে আমরা' নামে দুইটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন 



Share