অস্ট্রেলিয়ায় বুরুলি আলসার রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

A Buruli ulcer.

A Buruli ulcer. Source: Twitter - The University of Melbourne ‏

বুরুলি আলসার হলে অ্যান্টি-বায়োটিক মেডিসিন গ্রহণ করতে হয়। সাধারণত আট সপ্তাহের কোর্সে কাজ হয়। বিরল ক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসা করে চামড়া অপসারণ করতে হয়, এমনকি অঙ্গ কেঁটে ফেলে দিতেও হয়। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় বুরুলি আলসারে আক্রান্ত ১৮২ জন রোগী পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ২৩৬-এ দাঁড়ায়। এ বিষয়ে এসবিএস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন জিপি ডা. চৌধুরী বেগ।


অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া অঞ্চলে সম্প্রতি একটি ভয়াবহ রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে। রোগটির নাম বুরুলি আলসার (Buruli ulcer)। এ রোগ হলে ত্বকের উপরে ব্যথাহীন গোটার মতো হয়। মানুষ মনে করে পোকা-মাকড়ের কামড়ের ফলে হয়তো এরকম হয়েছে। এটি আস্তে আস্তে সংক্রমণ ঘটায় এবং চামড়ার নিচে মাংসপেশীর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তখন এটি শরীরের টিস্যু বা কোষগুলো ধ্বংস করতে থাকে। চামড়ার উপরে এটি ঘাঁ তৈরি করে। এর আগ পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুই বুঝতে পারে না। কিন্তু ঘাঁ তৈরি হওয়ার পর প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
corona Virus
GP Dr Chowdhury Beg. Source: GP Dr Chowdhury Beg
২০১৬ সালে ভিক্টোরিয়া এ ধরনের ১৮২ জন রোগী পাওয়া গেছে। আর, ২০১৭ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ২৩৬-এ দাঁড়িয়েছে।

এই সংক্রমণ হলে অ্যান্টি-বায়োটিক মেডিসিন গ্রহণ করতে হয়। সাধারণত আট সপ্তাহের কোর্সে কাজ হয়। বিরল ক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসা করে চামড়া অপসারণ করতে হয়, এমনকি অঙ্গ কেঁটে ফেলে দিতেও হয়।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুরুলি আলসার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর পল জনসন এই বিষয়টি নিয়ে ১৯৯৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, এক ধরনের ব্যাকটিরিয়ার জন্য এই রোগ হয়। সমূদ্রউপকূলবর্তী বিশেষ কয়েকটি অঞ্চলে কেন এই রোগ দেখা যায় তার কারণ খতিয়ে দেখছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া রাজ্যের বিশেষ কয়েকটি এলাকায় এ রোগটির প্রাদূর্ভাব দেখা যায়। আপনি যদি সেসব এলাকায় না যান, তাহলে আপনি আক্রান্ত হবেন না। কিন্তু, সেই এলাকাগুলোতে এমন কী রয়েছে যার জন্য মানুষ রোগাক্রান্ত হয়? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি আমরা।”

জনসন মনে করেন, যে ব্যাকটিরিয়ার জন্য এই রোগটির উৎপত্তি, তা হয়তো মশা এবং পসামস এর মাধ্যমে ছড়ায়। তার গবেষণাদল আক্রান্ত অঞ্চলের ব্যাপক সংখ্যক মশার নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছে খুব কম-সংখ্যক মশাই সেই ব্যাকটিরিয়া বহন করে।

এরপর তারা আক্রান্ত অঞ্চল থেকে রিংটেইল পসামস-এর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন।
Brush-tail Possum (Trichosurus vulpecula)
Brush-tail Possum (Trichosurus vulpecula) Source: Ardea Picture Library
তিনি বলেন, ‘আমাদের হাইপোথিসিস হচ্ছে, এই রোগের জন্য আসলে পসামস-ই দায়ী। পসামস-এর মাধ্যমে এটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পসামস-এর মলের মাধ্যমে এটি অন্যান্য কীট-পতঙ্গের শরীরে চলে যায়। সেসব কীটপতঙ্গ মানুষকে দংশন করলে এবং পসামস দংশন করলে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

মেডিক্যাল জার্নাল অফ অস্ট্রেলিয়াতে এ সম্পর্কে গবেষণা-প্রবন্ধ () প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধের লেখকগণ এ বিষয়ে গবেষণার জন্য সরকারি অর্থায়নের অনুরোধ করেছেন।

 

এসবিএস বাংলার সঙ্গে ডা. চৌধুরী বেগের সাক্ষাৎকার শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।


Share